মেঝেতে পড়ে ছিল অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর রক্তাক্ত লাশ, ওড়নায় ঝুলছিলেন স্বামী

ময়মনসিংহের ভালুকায় এক দম্পতির রক্তাক্ত ও ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় এক দম্পতির রক্তাক্ত ও ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার কাচিনা ইউনিয়নের পালগাঁও গ্রাম থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

লাশ উদ্ধার হওয়া দুজন হলেন রত্না বেগম (৩০) ও তাঁর স্বামী কামরুল ইসলাম (৩৫)। তাঁদের মধ্যে রত্নার লাশ রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল। তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আর কামরুলের লাশ গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ঝুলন্ত পাওয়া যায়। পুলিশের ধারণা, রত্নাকে হত্যার পর কামরুল ‘আত্মহত্যা’ করেন।

রত্না উপজেলার কাচিনা ইউনিয়নের পালগাঁও গ্রামের মুক্তার হোসেনের মেয়ে এবং কামরুল একই উপজেলার মল্লিকবাড়ি ইউনিয়নের বর্তা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে। কামরুল ইসলাম ইজিবাইক চালাতেন।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা জানান, রত্না বেগম ও কামরুল দম্পতির সাড়ে চার বছর বয়সী একটি ছেলে আছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য দিন নির্ধারণ করেছেন চিকিৎসক। প্রথম সন্তান রত্নার বাবার বাড়িতে হয়। এবারের সন্তানও বাবার বাড়িতে প্রসবের জন্য মেয়েকে আনতে যান রত্নার মা মনোয়ারা বেগম। কিন্তু কামরুল চাচ্ছিলেন, তাঁর বাড়িতেই স্ত্রী দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেবেন। গতকাল দুপুরে মেয়ে ও জামাতাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান মনোয়ারা বেগম। বাড়িতে যাওয়ার পর কামরুলের সঙ্গে রত্নার বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। রাতের খাবার শেষে তাঁদের প্রথম সন্তানকে নানির কাছে রেখে স্বামী-স্ত্রী পাশের ঘরে ঘুমাতে যান। রাত ১০টার দিকে ছেলে কান্নাকাটি শুরু করলে নানি মনোয়ারা বেগম ওই ঘরে গিয়ে ডাকাডাকি করলে দরজা না খোলায় সন্দেহ হয়। পরে দরজা ভেঙে ঘরের মেঝেতে রত্নার রক্তাক্ত লাশ ও গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় কামরুলের লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে লাশ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ।

রত্নার মা মনোয়ারা বেগম বলেন, জামাতার আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় মেয়েকে তাঁদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। কিন্তু জামাতা চাচ্ছিলেন, তাঁদের বাড়িতেই থাকুক। এ ছাড়া অন্য কোনো বিষয় নিয়ে ঝামেলা ছিল না।

ভালুকা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে ঘটনাটি ঘটে। রাতেই দুটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা দা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় রত্নার ভাই সুজন মিয়া বাদী হয়ে রাতে একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। আজ শনিবার দুটি লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি হত্যা করেছেন, তিনিও মারা যাওয়ায় হত্যা মামলা হয়নি।