ফুটবল খেলা থাকায় বেঁচে যান আরিফ
আবদুল্লাহ আরিফ। চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে সম্মান চতুর্থ বর্ষে পড়াশোনা করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারীর খন্দকিয়া গ্রামে। পড়াশোনার পাশাপাশি বন্ধুদের সঙ্গে গ্রামে তিনি একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করেন। সেন্টারের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বেড়াতে গেলেও ফুটবল খেলা থাকায় তিনি তাঁদের সঙ্গে যাননি। আর এই না যাওয়াতেই বেঁচে যান আরিফ।
আজ শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বড়তাকিয়া স্টেশনে ঢোকার আগে পূর্ব খৈয়াছড়া এলাকায় চট্টগ্রামমুখী মহানগর প্রভাতী ট্রেনের ধাক্কায় একটি মাইক্রোবাসের ১১ আরোহী নিহত হন। গুরুতর আহত হয়েছেন ছয়জন। হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে চালক ও তাঁর সহকারী ছাড়া সবাই হাটহাজারীর ‘আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ও শিক্ষক। এসএসসি ২০২২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে তাঁরা মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরনায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে তাঁরা দুর্ঘটনায় পড়েন। তাঁদের সবার বাড়ি খন্দকিয়া গ্রামে।
খন্দকিয়া গ্রামের যুগীর হাটে আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টারটি অবস্থিত। সেখানে ছয়জন শিক্ষক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চারজন মিরসরাইয়ে বেড়াতে যান। না যাওয়া দুজনের মধ্যে রয়েছেন আবদুল্লাহ আরিফ ও জেসি আক্তার নামের দুই শিক্ষক। জেসি আক্তার তাঁর পারিবারিক কাজের জন্য যাননি।
আবদুল্লাহ আরিফ প্রথম আলোকে বলেন, বেড়াতে না যাওয়াতে তাঁর বন্ধু–সহকর্মী শিক্ষকেরা তাঁর ওপর রাগ করেছিলেন। তাঁকে জিয়াউল হকসহ অনেকেই অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু স্থানীয় প্রাইমারি স্কুল মাঠে আগে থেকে ফুটবল ম্যাচ প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা থাকায় তিনি মিরসরাইয়ে যাননি।
দুপুরে খেয়ে বিকেলে খেলার জন্য ঘর থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন আরিফ। ওই সময় খবর পান দুর্ঘটনার। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান।
আবদুল্লাহ আরিফ প্রথম আলোকে বলেন, আজ লাশের সারিতে তিনিও থাকতেন। ফুটবল খেলার জন্য না যাওয়ায় তিনি বেঁচে যান। কিন্তু বাঁচলেও সহকর্মী, কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থীসহ এলাকার ১১ জন একসঙ্গে মারা যাওয়ার বিষয়টি তিনি মেনে নিতে পারছেন না।