যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক স্থায়ীভাবে, বিভাগীয় প্রধান সাময়িক বরখাস্ত

কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সভা চলার সময় প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তোলাছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক শিক্ষককে স্থায়ী বরখাস্ত করা হয়েছে। একই অভিযোগে বিভাগীয় প্রধানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সিন্ডিকেটের সভা শেষে দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান রেজিস্ট্রার হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যৌন হয়রানির অভিযোগে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহাকে স্থায়ী বরখাস্ত এবং বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক রেজুয়ান আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৌমিত্র শেখর উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আশা করব আর যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।’

আরও পড়ুন

রেজিস্ট্রার হুমায়ুন কবীর প্রথম আলোকে বলেন, যৌন হয়রানির এই অভিযোগ দুটি কমিটি তদন্ত শুরু করে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী কমিটি। অপরটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত বিশেষ কমিটি। এ মধ্যে যৌন নিপীড়নবিরোধী কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন আজকের সিন্ডিকেট সভায় প্রকাশ করা হয়। এ প্রতিবেদনে সাজন সাহার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে।

৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক ছাত্রী ফেসবুকে সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। ৫ মার্চ ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৌমিত্র শেখরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ছাড়া ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের কাছে যৌন হয়রানির ঘটনা বিস্তারিত তুলে ধরেন। ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, সাজন সাহার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ দিয়েছেন বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদের কাছে। কিন্তু তিনি সাজন সাহার পক্ষ অবলম্বন করেন এবং ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

ওই অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষকদের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করতে শুরু করেন। গতকাল বুধবার সকাল থেকে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কার্যালয়, বিভিন্ন অনুষদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকে তালা দেন। সেই সঙ্গে পরিবহনও বন্ধ করে দেন। পরে তাঁরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। বৃহস্পতিবার জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে জানালে সড়ক থেকে সরে আসেন।