অভাব ঘোচাতে বিদেশে যেতে চেয়েছিলেন, প্রতারিত হয়ে গেলেন থানায়

বগুড়ার শেরপুর থানাছবি: প্রথম আলো

দুই চোখে স্বপ্ন ছিল বিদেশে গিয়ে রোজগার করে সংসারের অভাব ঘোচাবেন। আবদুল আলীম নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে বিদেশে যেতে টাকা জমা দেন পাঁচ যুবক। একজন মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন। প্রতারিত হয়ে ছয় দিন জেল খেটে দেশে ফেরেন। এরই মধ্যে যুবকদের টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছে প্রতারক।

প্রতারণার শিকার ওই যুবকদের বাড়ি বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়িদহ ও সুঘাট ইউনিয়নে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে ভুক্তভোগী যুবকেরা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

ভুক্তভোগী যুবকদের একজন লাইলুল হক (৩৪)। বাড়ি গাড়িদহ ইউনিয়নের কাফুরা গ্রামে। লাইলুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল আলীম উপজেলার শেরুয়া এলাকার ব্যবসায়ী। তিনি বিদেশে লোক পাঠান। এ জন্য বিদেশে যেতে অন্তত দেড় বছর আগে তাঁরা আলীমের কাছে যান। তিনি পাঁচজনকে শ্রমিক হিসেবে পাঠানোর জন্য ১৭ লাখ ৩৪ হাজার টাকাও নেন।  

গত বছরের ৬ জুন একটি ভুয়া ভিসায় তাঁকে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়। ছয় দিন জেল খাটার পর তাঁকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয় বলে জানান লাইলুল হক। তিনি বলেন, দেশে ফেরার পর টাকা ফেরত চাইতে আলীমের কাছে একাধিকবার গিয়েছেন। আশ্বাস দিয়েও তিনি টাকা দেননি। এখন শেরপুর থেকে অন্য কোথাও চলে গেছেন। তাঁকে এখন ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না।

শেরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রবিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মালয়েশিয়ায় শ্রমিক হিসেবে পাঠাতে কাফুরা গ্রামের লাইলুল হকের কাছ থেকে আলীম ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন। একইভাবে আসিকুরের থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার, সাহাব উদ্দিনের থেকে ৩ লাখ ১৪ হাজার, মিন্টু মিয়ার থেকে ২ লাখ ৭০ হাজার ও সুঘাট ইউনিয়নের চকধুলি গ্রামের এমদাদুল হকের থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন। গতকাল সোমবার রাতে ভুক্তভোগীরা থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।

ভুক্তভোগী যুবকেরা জানান, তাঁদের অভাবের সংসার। বিদেশে গিয়ে রোজগারের আশায় আলীমের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। কেউ ঋণ করে, কেউ জমি-গরু বিক্রি করে টাকা দিয়েছিলেন। আলীম টাকা নিয়ে পালিয়ে যাবেন ভাবতেও পারেননি। টাকা না দিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় পরিবারের লোকজন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে আলীমের বিচার চেয়ে এখন থানায় এসেছেন।  

অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও আবদুল আলীমকে পাওয়া যায়নি। শেরুয়া এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, আলীম এলাকা ছেড়ে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে অবস্থান করছেন।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, অভিযোগ পেয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।