পলাতক স্বৈরাচার যতই হম্বিতম্বি করুক, তার ফিরে আসার কোনো সম্ভাবনা নাই: বিএনপি নেতা জাহিদ হোসেন

সুনামগঞ্জে ছাতকে বিএনপির কর্মী সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন। সোমবার বিকেলে পৌর শহরের পাবলিক মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

পলাতক স্বৈরাচারের ফিরে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, পলাতক স্বৈরাচার শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো দিন ফিরে আসেনি। তাই পলাতক স্বৈরাচার যতই হম্বিতম্বি করুক, তার ফিরে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই।

আজ সোমবার বিকেলে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় দলের কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ জেড এম জাহিদ হোসেন এ মন্তব্য করেন। ছাতক পৌর শহরের পাবলিক মাঠে (মন্টু বাবুর মাঠ) এ সমাবেশ হয়। সমাবেশ উপলক্ষে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ওই মাঠে জমায়েত হন।

সমাবেশে জাহিদ হোসেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনি যদি আসতে চান, বুকে সাহস থাকে, আসেন। আত্মসমর্পণ করেন, আইন-আদালত ফেস করেন। যে রকম আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া করেছেন। তিনি দেশে থেকেছেন, পালিয়ে যান নাই, বিদেশে চলে যান নাই।’

জাহিদ হোসেন বলেন, ‘সাড়ে ১৫ বছরে আমরা বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে হারিয়েছি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আবু সাঈদ-মুগ্ধরা শহীদ হওয়ার পর সাধারণ জনতা আন্দোলনে নেমে আসেন। বিএনপির ৪২২ জন নেতা-কর্মী আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন। গণ-আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যারা আমার ভাইদের হত্যা করেছে, তাদের বিচারের মুখোমুখি না করে এ দেশে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। অবশ্যই জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতা হত্যাকারী স্বৈরাচারদের বিচারের কাঠগড়ায় তুলতে হবে। নতুবা শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।’

বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা করবে উল্লেখ করে জাহিদ হোসেন আরও বলেন, যাঁরা সংস্কারের কথা বলেন, বিএনপি সেই সংস্কারকে স্বাগত জানায়। বিএনপির জন্মই হয়েছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে। সংস্কার বিএনপির রক্তে মিশে আছে।

বিএনপিতে কোনো সুযোগসন্ধানী নেতৃত্ব পাবে না উল্লেখ করে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, এখন অনেক মানুষ এই কাফেলায় আসবে। তাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার দরকার নাই। তবে নেতৃত্বে দেবে, যাঁরা সব সময় রাজপথে ছিলেন। রাজনীতি ভোটের জন্য, জনগণের জন্য। তাই জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান কালুরঘাট থেকে থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন। বিএনপির ইতিহাস বিজয়ের ইতিহাস, বীরের ইতিহাস।’

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সিলেট বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী এবং বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী।