স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, পুলিশ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গায় চলে এসেছে

নীলফামারী পুলিশ লাইনসে বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। মঙ্গলবার সন্ধায়
ছবি: প্রথম আলো

দেশের পুলিশ বাহিনী বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাশার জায়গায় চলে এসেছে বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু তাঁর মৃত্যুর কিছুদিন আগে বলেছিলেন, “তোমরা জনগণের পুলিশ হও। তোমরা দেশের ঔপনিবেশিক আমলের পুলিশ না, তোমরা স্বাধীন দেশের পুলিশ।” আজ পুলিশ সেই জায়গায় এসেছে, পুলিশ মানুষের আস্থার জায়গা, বিশ্বাসের জায়গায় চলে এসেছে। আমরা আগে পুলিশ দেখলে সরে যেতাম। পুলিশ মানেই একটা যন্ত্রণা, আমাদের কাছে এমনটাই ছিল তখন। আজ সেটির উল্টোটা হয়ে গেছে।’

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নীলফামারী পুলিশ লাইনসে বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার আগে বিকেল সোয়া চারটার দিকে নীলফামারী পুলিশ সুপার কার্যালয় চত্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালের ফলক উন্মোচন করেন তিনি।

বর্তমান সরকারের প্রশংসা করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমরা দেশের জনগণের শক্তিতে চলি। আমরা কোনো ষড়যন্ত্র কিংবা বন্দুকের নলে ক্ষমতায় আসিনি। আমরা এসেছি ভোটের মাধ্যমে, জনগণের রায়ের মাধ্যমে। আমি সারা বাংলাদেশ ঘুরি, সারা বাংলাদেশে একটিই দল (আওয়ামী লীগ)। শেখ হাসিনার বিকল্প শুধু শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। জনগণ এটাই মনে করে, শেখ হাসিনা যত দিন বেঁচে থাকবেন, তত দিন আলোকিত থাকবে বাংলাদেশ।’

বিএনপির সমালোচনা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন, এ ইলেকশন তাঁরা মানেন না। ইলেকশন প্রতিহত করবেন। সব সময় তাঁরা প্রতিহত করেছেন, সব সময় তাঁরা প্রতিহত করে জনগণের ধিক্কারে পরিণত হয়েছেন। আমরা দেখেছি, তাঁরা বন্দুকের নল ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমেই ক্ষমতায় এসেছেন। আওয়ামী লীগ জনগণের রায়ে ক্ষমতায় আসে। জনগণ আমাদের পক্ষে থাকলে আমরা আর কিছু চিন্তা করি না। কে কী বলল বা কে কী চোখ রাঙাল বা কোথায় বসে ষড়যন্ত্র করল, সেগুলো আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমাদের দেখার বিষয়, আমাদের দেশের জনগণ কাকে চায়। আমি যেখানেই দেখি, সেখানেই একই আওয়াজ, একই স্লোগান—শেখ হাসিনার বিকল্প কিছু নেই।’

নীলফামারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন নীলফামারী-১ ডোমার ডিমলা আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য রাবেয়া আলীম, পুলিশের রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মিজানুর রহমান। সমাবেশের উদ্বোধনী বক্তব্য দেন নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ।

আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনন্য অসাধারণ অবদান নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। যাঁরা স্বাধীন বাংলাদেশে বিশ্বাস করেন, যাঁরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাস করেন, যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেন, তাঁদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের অবদান সব সময় স্মরণীয় এবং শ্রদ্ধার বিষয়। আর যাঁরা আমাদের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না, পাকিস্তানি ভাবধারায় নিজেদের রাজনীতিকে পরিচালনা করেন, তাঁরা আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি দেন না।’

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর বাংলাদেশের ইতিহাস অনেক দিন উল্টো পথে হেঁটেছে বলে মনে করেন আসাদুজ্জামান নূর। তিনি বলেন, ‘ইতিহাস বিকৃত হয়েছে, পাঠ্যপুস্তক বিকৃত হয়েছে, আমাদের সন্তানেরা ভুল ধারণা নিয়ে বড় হয়ে উঠেছে। কিন্তু সেই অন্ধকার যুগের অবসান ঘটেছে বঙ্গবন্ধুকন্যার ক্ষমতায় আসার মধ্য দিয়ে।’

সমাবেশ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল হক, নীলফামারী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।