সামান্য বৃষ্টিতেই মূল সড়কসহ আটোয়ারীর ফকিরগঞ্জ বাজারের অলিগলিতে জলাবদ্ধতা

পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সড়কে হাঁটুপানি জমে। প্রতিবছর প্রায় তিন মাস ধরে থাকে এমন ভোগান্তি। 

আটোয়ারী উপজেলা শহরের ফকিরগঞ্জ বাজারে পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। সড়কে পানি জমে আছে। গত শনিবার তোলা
ছবি: প্রথম আলো

খানাখন্দে ভরা সড়কে জমে আছে পানি। সেখান দিয়েই চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহন। পানি মাড়িয়ে যেতে হচ্ছে পথচারীদের। কেউ কেউ আবার বাইসাইকেল থেকে নেমে হেঁটে পার হচ্ছেন এসব খানাখন্দ। গত শনিবার বিকেলে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র ফকিরগঞ্জ বাজারে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।

পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বাজারের মধ্য দিয়ে যাওয়া এই সড়কটিতে সামান্য বৃষ্টিতে জমে থাকছে পানি। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে।

উপজেলা সদরের ফকিরগঞ্জ বাজারের মধ্য দিয়ে যাওয়া আটোয়ারী-বোদা সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার করা হয়নি। এতে সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের দুই পাশে দোকানগুলো সড়কের চেয়ে উঁচু অবস্থানে রয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কে হাঁটুপানি জমে যায়। বিপাকে পড়তে হয় ব্যবসাসহ নানা প্রয়োজনে প্রতিদিনই বাজারে আসা হাজারো মানুষকে। বিশেষ করে ভোগান্তিতে পড়েন উপজেলার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। প্রতিবছর প্রায় তিন মাস ধরে থাকে এমন ভোগান্তি। 

বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলেই ভোগান্তিতে পড়েন তাঁরা। প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার ফকিরগঞ্জে হাট বসে। এই হাটে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ গরু-ছাগল, শুকনো মরিচসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করতে আসেন। এতে ওই দুই দিন মানুষের সমাগম বেড়ে যায়। আর বর্ষা এলেই সামান্য বৃষ্টিতে মূল সড়কসহ বাজারের অলিগলিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। 

এদিকে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘবে সম্প্রতি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) ফকিরগঞ্জ বাজারের ওপর দিয়ে যাওয়া বোদা-আটোয়ারী সড়কের পূর্ব পাশে ৭৩৩ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি নালা নির্মাণ করেছে। এতে খরচ হয়েছে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। তবে সড়কের চেয়ে নালা উঁচুতে হওয়ায় পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে না। অপরিকল্পিতভাবে নালা নির্মাণ করে সরকারের টাকা নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় লোকজনের। 

উপজেলার আলোয়াখোয়া এলাকার বাসিন্দা সুলতান আলী (৬০) বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দেখতেছি সামান্য বৃষ্টি হলেই বাজারের মধ্যে পানি জমে থাকে। অনেক কষ্ট করে এই পানি পার হয়ে যেতে হয়। ছাত্রছাত্রীরা অনেক কষ্ট করে যাতায়াত করে।’ 

জহিরুল ইসলাম (৪৪) নামের এক ব্যক্তি বলেন, বৃষ্টির পানি কোনো দিকেই যাওয়া রাস্তা নেই। যখন নালা ছিল না, তখন যে অবস্থা ছিল, এখনো সেই একই অবস্থা। একটা নালা নির্মাণ করা হয়েছে, সেটা আবার সড়কের চেয়ে অনেক উঁচু।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসফিকুল আলম হালিম বলেন, বোদা উপজেলা থেকে আটোয়ারী পর্যন্ত যে সড়কের সংস্কারকাজ চলছে, সেই প্রকল্পের আওতায় ফকিরগঞ্জ বাজারের সড়কটি রয়েছে। এ জন্য আলাদা করে কোনো প্রকল্প নেওয়া যায়নি। তবে সড়কের পাশে যে নালা নির্মাণ করা হয়েছে, তা বর্তমানে সড়কের চেয়ে কিছুটা উঁচু। সড়কটি সংস্কার হলে এটা ঠিক হয়ে যাবে। তখন আর সড়কে পানি জমে থাকবে না। এ ছাড়া হাটের ভেতরের জায়গাটটিতে জলাবদ্ধতা নিরসনে আরও কিছু কাজ করা হচ্ছে। সেখান থেকে একটি নালা নিয়ে মূল নালায় সংযোগ করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।