দৌলতদিয়া ঘাটে সংযোগ সড়কে ধুলায় ভোগান্তি

ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক ধুলায় ভরে গেছে। গতকাল সোমবার রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দৌলতদিয়ার ৪ নম্বর ফেরিঘাটেছবি: প্রথম আলো

প্রিয়জনের সঙ্গে ছুটি কাটিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনেকে কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন; আবার অনেকে ফিরছেন। ওই অঞ্চল থেকে রাজধানীতে আসার পথে তাঁরা রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দৌলতদিয়া ঘাটে ধুলাবালিতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

এদিকে ঈদের আগেই ফেরিঘাটের সংযোগ সড়কে ধুলার কারণে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। ঈদের আগে যানবাহন ও ঘরমুখী যাত্রী পারাপার নির্বিঘ্ন করতে গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সমন্বয় সভায় ওই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। ওই সভায় জানানো হয়েছিল, সংযোগ সড়কে ধুলাবালু যাত্রীদের বাড়তি ভোগান্তি কারণ হতে পারে। তখন ধুলাবালু নিবারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

ধুলা এড়াতে নাক–মুখ চেপে চলাচল করেন পথচারী ও রিকশার যাত্রীরা
ছবি: প্রথম আলো

ঘাটসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দৌলতদিয়ায় সাতটি ফেরিঘাট রয়েছে। এর মধ্যে কয়েক বছর ধরে পদ্মা নদীর ভাঙনে ১, ২ ও ৫ নম্বর ফেরিঘাট বন্ধ। নদীর নাব্যতা অনেক কমে যাওয়ায় ৬ নম্বর ঘাট শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকে বন্ধ রয়েছে। অবশিষ্ট ৩, ৪ ও ৭ নম্বর ঘাট চালু রয়েছে। ফেরিঘাট সংযোগ সড়কের (ফেরি থেকে যে সড়ক দিয়ে পাকা সড়কে ওঠে) দৈর্ঘ্য হচ্ছে ২৫০–৩০০ মিটার। সড়ক দিয়ে নিয়মিত গাড়ি ওঠানামা করায় ইটের আধা ভাঙা খোয়া-বালু গুঁড়া হয়ে ধুলাবালুতে পরিণত হয়েছে।

এ সম্পর্কে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘ঈদে যানবাহন চলাচল অনেক বেড়ে যায়। এতে বেশি ধুলাবালু সৃষ্টি হচ্ছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ধুলার হাত থেকে রক্ষা পেতে সংযোগ সড়ক ছেড়ে মূল সড়কের জিরো পয়েন্টে বসে আছি। বিআইডব্লিউটিএকে ধুলা নিবারণে অনুরোধ জানিয়েছি।’

একটি পরিবহনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঘাট প্রতিনিধি মনির হোসেন বলেন, ‘ঘাটে নিয়মিত ডিউটি করতে হয়। ফেরিঘাট সড়কে প্রচুর ধুলাবালু। অনেকের শ্বাসকষ্ট পর্যন্ত হচ্ছে। সড়কের দুই পাশে থাকা দোকানিরা অনেক সময় নিজ থেকে পানি দেন। তবে তা যথেষ্ট নয়। ধুলাবালু নিবারণে নিয়মিত পানি দেওয়া দরকার।’

গতকাল সোমবার কুষ্টিয়া থেকে নিজ কর্মস্থল সাভার যাওয়ার পথে দৌলতদিয়া ঘাটে কথা হয় শাহাদত হোসেন নামের একজনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঘাটের সংযোগ সড়কে যেন হাঁটুসমান ধুলাবালু হয়েছে। এই সড়ক দিয়ে ফেরিতে ওঠা কঠিন। যাত্রীদের নির্বিঘ্ন পারাপারে অনেক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা শুনি। কিন্তু বাস্তবে এসব কি দেখছি?’  

বিআইডব্লিউটিএর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ইটের তৈরি সংযোগ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ, সংস্কারে ইটের আদলা, বালু-মাটি ব্যবহার হয় বলে শুষ্ক মৌসুমে প্রচুর ধুলা হয়। ঈদের আগে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয় সভায় ধুলাবালু নিবারণে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তবে এ খাতে আমাদের কোনো বরাদ্দ নেই। এরপরও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

সহিদুল ইসলাম আরও বলেন, পানি ছিটানোর জন্য এর আগে উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তার অনুরোধে একটি মোটর পাম্প কিনে দেওয়া হয়েছিল। সেটি কী হয়েছে জানা নেই। বাধ্য হয়ে পন্টুন থেকে শ্রমিক দিয়ে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।