কক্সবাজারে সৈকতে ভেসে যাচ্ছিলেন বন্ধু, বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারালেন যুবক

কক্সবাজার সৈকতে সৃষ্ট গুপ্তখালের পাশে গোসলে নামতে নিষেধ করে ওড়ানো হয়েছে লাল নিশানা। কিন্তু কেউ মানছেন না নিষেধাজ্ঞা। আজ দুপুরে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে মো. রাজিব (৩০) নামের এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেল চারটার দিকে পাঁচ বন্ধুর সঙ্গে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে গোসলে নামেন রাজিব। হঠাৎ এক বন্ধু স্রোতের টানে ভেসে যেতে থাকলে তাঁকে উদ্ধারে এগিয়ে যান রাজিব। এরপর তিনিও স্রোতে তলিয়ে যান।

দীর্ঘ সময় খোঁজাখুঁজির পর রাত ১২টার দিকে সৈকতের কবিতা চত্বর পয়েন্টে (লাবনী পয়েন্টের আধা কিলোমিটার উত্তরে) রাজিবের মরদেহ ভেসে ওঠে।

রাজিব চট্টগ্রাম নগরের দেওয়ানহাট বড়পুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দা। তিনি পেশায় গ্রাফিক ডিজাইনার ছিলেন। চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লায় একটি দোকানে কাজ করতেন। ঈদের ছুটিতে বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজারে ঘুরতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস খান বলেন, বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। সতর্কতা হিসেবে সৈকতে লাল পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অনেকেই গোসলে নেমে বিপদে পড়ছেন। রাজিবের মরদেহ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

জেলা প্রশাসনের বিচকর্মী মাহবুব আলম বলেন, রোববার বিকেলে রাজিবসহ পাঁচ বন্ধু সাগরের পানিতে গোসল করতে নামেন। এক বন্ধু স্রোতে ভেসে যেতে থাকলে রাজিব তাঁকে বাঁচাতে ছুটে যান। এরপর আর ফিরে আসেননি। ধারণা করা হচ্ছে যে রাজিব সৈকতের নিচে সৃষ্ট গুপ্ত খালে আটকা পড়েছিলেন।

সম্প্রতি লাবনী, সুগন্ধা ও কলাতলি পয়েন্টে বেশ কয়েকটি গুপ্ত খাল বা চ্যানেলের সৃষ্টি হয়েছে। এসব জায়গায় লাল পতাকা দিয়ে সতর্কতা জারি করা হলেও অনেকেই তা মানছেন না।

ঈদের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কক্সবাজারে বিপুলসংখ্যক পর্যটক আসছেন। হোটেলমালিকেরা জানান, ৯০ শতাংশ পর্যটক সমুদ্রে গোসলে আগ্রহী। কিন্তু তাঁরা সতর্কতা না মানার কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে।

সৈকতের কলাতলী থেকে লাবনী পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় উদ্ধারকাজে নিয়োজিত রয়েছেন বেসরকারি একটি সংস্থার ২৭ জন লাইফগার্ড। তবে অবশিষ্ট ১১৫ কিলোমিটার সৈকত এলাকায় কোনো উদ্ধারকর্মী নেই।