আওয়ামী লীগের মনোনয়ন লড়াইয়ে ফারজানা-মাহমুদ

আজ শুরু হচ্ছে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি। ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মনোনয়ন ফরম জমার শেষ দিন। এরপরই চূড়ান্ত হবে দলীয় মনোনয়ন।

ফারজানা রাব্বী ও মাহমুদ হাসান

সাতবারের সংসদ সদস্য ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে শূন্য গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে আজ রোববার থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী অনেকেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তাঁদের মধ্যে ফারজানা রাব্বী ও মাহমুদ হাসানের নাম সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে।

ফারজানা প্রয়াত সংসদ সদস্য ফজলে রাব্বীর মেয়ে। তিনি ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। মাহমুদ হাসান বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। মনোনয়নপ্রত্যাশী বাকিদের মধ্যে আছেন ফজলে রাব্বীর ছোট ভাই ফরহাদ রাব্বীর স্ত্রী জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য লুদমিলা পারভীন, ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জি এম সেলিম পারভেজ, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন, আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবর রহমান ও সাবেক যুবলীগ নেতা সুশীল চন্দ্র সরকার।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। কখনো তাঁরা এলাকায় গণসংযোগ করছেন, আবার কখনো ঢাকায় দলের শীর্ষ নেতাদের কারছে ধরনা দিচ্ছেন। আজ শুরু হচ্ছে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি। ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মনোনয়ন ফরম জমার শেষ দিন। এরপরই চূড়ান্ত হবে দলীয় মনোনয়ন।

এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মনোনীত হন ফজলে রাব্বী। শেষ ছয় মাসের বেশি সময় ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। গত ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাতজন দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকলেও মূলত মাহমুদ হাসান ও ফারজানা রাব্বীকে নিয়েই আলোচনা চলছে। বাবার ইমেজ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে ফারজানা রাব্বী এগিয়ে থাকবেন বলে মনে করছেন তাঁর সমর্থকেরা। অন্যদিকে ছাত্ররাজনীতি থেকে উঠে আসা মাহমুদ হাসানের তরুণ-যুবকদের ওপর প্রভাব রয়েছে, যা তাঁকে এগিয়ে রাখবেন বলে দাবি সমর্থকদের।

বাবার অসুস্থতার পর থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় হতে শুরু করেন ফারজানা রাব্বী। ফারজানা রাব্বীর সমর্থক ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বলেন, ফারজানার বাবা সাতবারের সংসদ সদস্য হিসেবে এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছেন। এই উন্নয়নের ফসল ফারজানার নিয়ন্ত্রণে। তাঁর স্বামী একজন বিচারপতি। এ ছাড়া ক্ষমতায় থাকাকালে ডেপুটি স্পিকারের মৃত্যু হয়েছে। মেয়ের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে বিষয়টি অগ্রাধিকার পেতে পারে।

ফারজানা রাব্বী বলেন, মনোনয়ন পাবেন বলে তিনি শতভাগ আশাবাদী। নির্বাচিত হলে বাবার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করবেন।

মাহমুদ হাসানের সমর্থকেরা বলছেন, ২০১৭ সাল থেকে গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগের তিনজন সংসদ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। এসব উপনির্বাচনে কোথাও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এবারও তাঁর ব্যতিক্রম হবে না বলে মনে করেন মাহমুদ হাসানের সমর্থক সাঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামসিল আরেফিন। তিনি বলেন, দুই উপজেলার তরুণ ও যুবসমাজের মধ্যে মাহমুদ হাসানের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। ফজলে রাব্বী জাতীয় পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ২০০১ সালে নির্বাচন করে হেরে যান। তখন থেকে দলকে চাঙা রেখেছেন মাহমুদ। এ বিবেচনায় তিনি মনোনয়ন পাওয়ার দাবিদার।

মাহমুদ হাসান বলেন, ফজলে রাব্বী বেঁচে থাকতে প্রতিটি নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। মনোনয়ন না পেয়েও নিজে সক্রিয় থেকে দলকে চাঙা রেখেছেন। দীর্ঘদিন ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন। উপনির্বাচনে দল তাঁকে মূল্যায়ন করবে।