শরীয়তপুরে ধর্ষণের পর হত্যার অপরাধে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড

আদালতের রায়
প্রতীকী ছবি

শরীয়তপুরের ডামুড্যায় এক নারীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে পাঁচ ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সোহেল আহমেদ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে এ রায় ঘোষণা করেন।

সাজা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন নিজাম বালী (৪৫), মোহাম্মদ আলী (৩৫), ওমর ফারুক ব্যাপারী (২৪), আল আমীন ব্যাপারী (২০) ও ইব্রাহীম মোল্লা (২১)। তাঁরা ডামুড্যা উপজেলার দক্ষিণ শীতলকাঠী এলাকার বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অপর তিন আসামি পলাতক।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল বিকেল পাঁচটার দিকে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের ভূঁইয়া বাজার এলাকার ৫৫ বছর বয়সী এক নারী। ২১ এপ্রিল বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের পূর্ব ডামুড্যা ইউনিয়নের বড় নওগাঁ এলাকায় একটি পরিত্যক্ত ডোবা থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পরদিন ওই নারীর ছোট ভাই বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ২ থেকে ৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হত্যা মামলা করেন। ওই আসামিদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।

আদালত সূত্র জানায়, ওই নারীকে হত্যার অভিযোগে মামলা হওয়ার পর নিজাম বালী, ওমর ফারুক ও মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরা ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। অপর দুই আসামি ইব্রাহীম ও আল আমীন ঘটনার পর থেকেই পলাতক। আর ওমর ফারুক জামিনে নিয়ে পলাতক আছেন। দীর্ঘ ৫ বছর যুক্তিতর্ক ও ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার অপরাধে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং তাঁদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন।

নিহত নারীর ছেলে বলেন, ‘আমার মাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আজ অভিযুক্ত পাঁচজনের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। আমরা রায়ে খুশি হয়েছি। তবে সরকারের কাছে একটাই দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন এ রায় কার্যকর করা হয়। পলাতক তিনজনকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’

শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি সানাল মিয়া বলেন, ‘এটি একটি আলোচিত হত্যাকাণ্ডের রায়। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সন্তুষ্ট।’