মনে হচ্ছে দেশটা একদলীয় শাসনব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে: তৈমুর আলম খন্দকার

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে তৃণমূল বিএনপির এক নারী কর্মীর বাড়িতে হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তৈমুর আলম খন্দকার। বুধবার দুপুরেছবি: প্রথম আলো

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের প্রার্থী ও ‘কিংস পার্টি’খ্যাত তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার বলেছেন, ‘আমরা এ রকম সাজানো নির্বাচনে আর যাব না। এই নির্বাচন হইছে সরকার বনাম সরকার, নৌকাও সরকারের, স্বতন্ত্রও সরকারের। মনে হচ্ছে দেশটা একদলীয় শাসনব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’

আজ বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে তৃণমূল বিএনপির এক নারী কর্মীর বাড়িতে হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিতে এসে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৩ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কেটলি প্রতীকের মো. শাহজাহান ভূঁইয়া পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৭৫ ভোট। আর তৈমুর আলম খন্দকার মাত্র ৩ হাজার ১৯০ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। এমনকি আসনের বাতিল হওয়া ভোটের চেয়ে কম ভোট পেয়েছেন তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব।

তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, নির্বাচন নিয়ে সারা দেশের প্রার্থীদের ঢাকায় ডেকে দলীয় প্রধানের সঙ্গে বসবেন এবং পরবর্তী সময়ে দলীয় বক্তব্য পেশ করা করা হবে। তিনি বলেন, ‘তৃণমূল বিএনপি রাজপথে ছিল, রাজপথেই রাজনীতি করবে। আমরা আমাদের দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করব। সব ক্যান্ডিডেটকে ঢাকায় ডাকব। তাঁদের কাছ থেকে রিপোর্ট নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করব।’

নির্বাচনে রূপগঞ্জের ভূমিদস্যুরা তাঁর বিরুদ্ধে এককাট্টা ছিল উল্লেখ করে তৈমুর বলেন, ‘তারা মনে করছে, তৈমুর আলম খন্দকার এলে তাকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। কারণ শুরু থেকেই আমি ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে অবস্থানে ছিলাম। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, যাদের জমিজমা নিয়ে গেল তারাও তো ভয়ে-আতঙ্কে আর আগাইয়া আসল না।’

তিনি বলেন, ‘এই দেশে আমাদের প্রজন্মের পক্ষে সুষ্ঠু রাজনীতি সম্ভব না। আগামী প্রজন্মও পারবে না। যদি সম্ভব হয় তৃতীয় প্রজন্ম এসে দেশটাকে ঠিক করতে পারে। কারণ, যারা সরকারে আছে, তারা মনে করে, নির্বাচনে হেরে গেলেই তাঁদের জেলে যেতে হবে। বাংলাদেশে সিস্টেমই এইটা। যে ক্ষমতায় যায় তার প্রতিপক্ষকে জেলে দিয়ে দেয়। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশনের কোনো ক্ষমতা থাকে না।’

তৈমুর আলম আরও বলেন, ‘নির্বাচনটাকে যেভাবে কুক্ষিগত করা হয়েছে, তাতে নির্বাচন কমিশনের ব্যাসিক্যালি কোনো ক্ষমতা নাই। তাদের কোনো জনবল নাই, তারা প্রশাসনের ওপর নির্ভর করে। প্রশাসনও সরকারের আজ্ঞাবহ থাকে। ইসি সচিবের বক্তব্য আপনারা শুনেছেন, তাঁর বক্তব্যে কী মনে হয়, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে? তিনি তো বলছেন, ডিসিদের কাছে তো মেসেজ চলে গেছে। ইসি থেকেই সব প্রকাশ পেয়ে গেছে।’

তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা তুলে ধরেছিলেন। আমরা এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব। আমরা সাজানো নির্বাচনে আর যাব না। তৃণমূল বিএনপি রাজপথে থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাবে। দেশের এই নির্বাচনী ব্যবস্থায় টিকে থাকতে হলে আমাদের রাজপথে থাকতে হবে।’