কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে উদ্বোধনের পরদিন সেতু পরিণত হলো ঈদ বিনোদনকেন্দ্রে

উদ্বোধনের এক দিন পর ঈদের দিনে বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতুছবি: প্রথম আলো

খুলে দেওয়ার পরদিনই দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় হয়েছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতুতে। পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে অনেকেই সেতুতে ঘুরতে এসেছেন।

সেতুর ওপরে যত্রতত্র যানবাহন রাখা, থামানো এবং অতিরিক্ত মানুষের চাপে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সেতু, সংযোগ সড়ক ও আশপাশে প্রায় দেড় কিলোমিটারজুড়ে ছিল এই যানজট। এ কারণে ভোগান্তি হলেও সেতুতে ঘুরতে আসা মানুষেরা ছিলেন বেশ খুশি।

গতকাল বুধবার সকালে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতু চলাচলের জন্য খুলে দেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ। প্রায় ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৬৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুতে সংযোগ সড়ক আছে ৫৫০ মিটার।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নানা বয়সী দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়, পা ফেলার জায়গা নেই। কেউ এসেছেন ঈদ উপলক্ষে ঘুরতে, কেউ এসেছেন নতুন সেতুটি একনজর দেখতে। স্মার্টফোনে সেলফি তোলার দৃশ্য ছিল চোখে পড়ার মতো। এর মধ্যেই যানজট নিরসনে সেখানে কাজ করছিলেন পুলিশের সদস্যরা।

রাজিব আহমেদ নামের এক দর্শনার্থী বলেন, তিনি প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে যানজটে ছিলেন। যানবাহন নিয়ে এগোনোর সুযোগ ছিল না। কিছুটা ভোগান্তি হলেও যানজট নিয়ে তাঁর কোনো অভিযোগ বা দুঃখ নেই। নতুন সেতুতে উঠতে পেরে খুব খুশি তিনি।

নাজমুল হোসেন নামের আরেক দর্শনার্থী বলেন, নতুন সেতুর উদ্বোধন ও ঈদের উৎসব একসঙ্গে। সে জন্য মানুষের চাপ বেশি। বন্ধুদের নিয়ে তিনি ঘুরতে এসেছেন বলে জানান। ষাটোর্ধ্ব আক্কাস আলী বলেন, নাতির সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে সেতু দেখতে এসেছেন তিনি। মানুষের খুব ভিড়। যানজটে আটকে ছিলেন অনেক সময়। তবু তিনি আনন্দিত।

সেতুতে যানজট নিরসনে কাজ করছিলেন কুমারখালী পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, একদিকে নতুন সেতু, অন্যদিকে ঈদ। সব মিলিয়ে ব্যাপক ভিড় সেতু এলাকায়। তিনি এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছিলেন।

গড়াই নদের তীর ঘেঁষে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার অবস্থান। নদটি উপজেলাকে দুই ভাগে ভাগ করে রেখেছে। ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ছয়টি নদের এপারে (উত্তর) আর পাঁচটি ওপারে (দক্ষিণ)। যদুবয়রা, পান্টি, চাঁদপুর, বাগুলাট ও চাপড়া নামে পাঁচটি ইউনিয়নের মানুষেরা উপজেলা সদরের যোগাযোগ আগে বেশ কঠিন ছিল। তবে নতুন সেতু চালু হওয়ায় এখন অনেক অপেক্ষার অবসান ঘটেছে।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোহসীন হোসাইন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে, যানজট নিরসনে ও দর্শনার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করছে পুলিশ।