সারা রাত জেগে ছিল সমাবেশস্থল, মোড়ে মোড়ে পুলিশের সতর্ক উপস্থিতি

বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ উপলক্ষে রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থান। কাকলির মোড়, বরিশালছবি: সাইয়ান

সকালের আলো ফোটার আগেই বরিশাল শহরে স্লোগানের ধ্বনি। নদীবন্দর–সংলগ্ন ডিসি ঘাট থেকে দক্ষিণে চাঁদমারী স্টেডিয়াম। কীর্তনখোলা নদীর তীরে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে ট্রলার, পণ্যবাহী নৌযানগুলো নোঙর করা। সেখান থেকে নেতা-কর্মীরা কিনারে নামছেন। এরপর দল বেঁধে যাত্রা সমাবেশস্থলে।

বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে গতকাল শুক্রবার রাত থেকেই সমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যান ছিল জাগ্রত। আগে থেকে সেখানে অবস্থান নেওয়া কয়েক হাজার নেতা-কর্মী গান, স্লোগান ও বক্তৃতায় রাত পার করেছেন। রাতভরই বিভিন্ন স্থানের নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে আসেন।

আজ শনিবার সকালে বরিশাল নগরের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা শুরু করে বরিশাল নদীবন্দর পর্যন্ত পুরো এলাকা ছিল আগত নেতা-কর্মীদের স্লোগানে মুখর। তাঁদের সবার হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। সবাই সরকারের পদত্যাগ দাবি করে নানা স্লোগান দেন।

আজ সকাল থেকেই নগরের বেশির ভাগ এলাকার দোকানপাট বন্ধ, সড়কে রিকশা ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন নেই। মোড়ে মোড়ে বিপুলসংখ্যক পুলিশ টহল দিচ্ছে।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে খণ্ড খণ্ড দলে ভাগ হয়ে মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে আসেন। তবে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বরিশাল নগরে কোনো সংঘাত, সংঘর্ষের ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

ঝালকাঠির কীর্তিপাশা ইউনিয়ন থেকে পাঁচটি ট্রলার নিয়ে সমাবেশে এসেছেন স্থানীয় বিএনপির কয়েক শ নেতা-কর্মী। রাত ১২টায় কীর্তিপাশা ট্রলারঘাট থেকে রওনা হওয়ার কথা থাকলেও আগেই খবর পেয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সেখানে অবস্থান নিয়ে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পরে হামলা এড়াতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা কীর্তিপাশা থেকে উত্তর দিকে ভীমরুলি থেকে ট্রলারে ওঠেন। রাত তিনটার দিকে অনেক কষ্টে বরিশাল পৌঁছান। কীর্তিপাশা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনিসুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, প্রায় স্থানেই নেতা-কর্মীদের আসার পথে এমন বাধা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে আজ বেলা দুইটায় গণসমাবেশ শুরু হবে। এর আগেই পুরো উদ্যান প্রায় পূর্ণ হয়ে গেছে। নেতারা মঞ্চে আসবেন বেলা দুইটার পরে। সভামঞ্চে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য একটি চেয়ার ফাঁকা রাখা হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও গণসমাবেশ আয়োজনের অন্যতম সমন্বয়কারী বিলকিস আক্তার জাহান প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশ বানচাল করার জন্য সরকারি দল কোনো কিছুই বাদ রাখেনি। বরিশালকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ নৌপথের সব যান বন্ধ করার পরও মানুষ যে যেভাবে পারছেন সমাবেশে আসছেন, আসবেনই। এরই মধ্যে সমাবেশস্থলে লাখো মানুষ জমায়েত হয়েছেন।