স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিত্যক্ত অ্যাম্বুলেন্সে বসবাস করছেন এক নারী 

এই নারীর স্বজনদের সন্ধান চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন ভয়েস অব ঝিনাইগাতীর প্রতিষ্ঠাতা ও ঝিনাইগাতী সদর ইউপির সদস্য জাহিদুল হক। 

ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিত্যক্ত অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে বাস করা অজ্ঞাতপরিচয়ের নারী রুমাছবি: প্রথম আলো

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিত্যক্ত অ্যাম্বুলেন্সে তিন মাসের বেশি সময় ধরে বাস করছেন রুমা নামের এক মধ্যবয়স্ক নারী। নাম ছাড়া নিজের সম্পর্কে আর কিছুই বলতে পারেন না তিনি। তীব্র শীতে কোনো গরম কাপড় ছাড়াই সেখানে রাত যাপন করেন তিনি। আবার কখনো বিভিন্ন ভবনের খোলা জায়গায় রাত যাপন করতে দেখা যায় তাঁকে। সারা দিন বাজার ঘুরে যা খাবার পান, তা খেয়েই কাটে তাঁর সময়। 

এমনি এক নারীর সন্ধান পেয়েছেন ঝিনাইগাতীর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভয়েস অব ঝিনাইগাতী। এরপর এই সংগঠন এবং শেরপুর ৭১–এর সদস্যরা খাবার, শীতবস্ত্র ও কম্বল অ্যাম্বুলেন্সে থাকা রুমার হাতে তুলে দেন। এই নারীর স্বজনদের সন্ধান চেয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেন ভয়েস অব ঝিনাইগাতীর প্রতিষ্ঠাতা ও ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাহিদুল হক।

ভয়েস অব ঝিনাইগাতীর দেওয়া তথ্যমতে, গত বছরের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে হাসপাতাল চত্বরে দেখা মেলে রুমার। প্রথম দিকে কারও সঙ্গে কথা না বললেও এখন নাম জিজ্ঞেস করলে তাঁর নাম রুমা বলে উত্তর দেন। তাঁর ঠিকানা সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা দিতে পারেন না তিনি। 

ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভান্ডাররক্ষক (স্টোরকিপার) হারুন অর রশীদ জানান, তিন মাস ধরে এই অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর মানবেতর জীবন যাপন করছেন রুমা। স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে তাঁর পরিবারের পরিচয় বের করা জরুরি। তাঁর চিকিৎসাও প্রয়োজন। তাহলে হয়তো রুমা আবার সুস্থ হয়ে উঠবেন। 

ভয়েস অব ঝিনাইগাতীর প্রতিষ্ঠাতা জাহিদুল হক বলেন, তাঁর সংগঠনের সদস্যরা নিয়মিত ওই নারীর বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। আপাতত তাঁকে খাবার ও শীতবস্ত্র দেওয়া হয়েছে। তাঁর পরিচয়ের বিষয়ে শুধু রুমা ছাড়া আর কিছুই বলতে পারেন না। তাঁদের স্বেচ্ছাসেবীরা ইতিমধ্যে ফেসবুকে রুমার ছবিসহ পরিচয় জানতে চেয়ে পোস্ট করেছেন। আশা করা যায়, দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তাঁর (রুমা) পরিবারের সন্ধান পাওয়া যাবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাজীব সাহা বলেন, নারীটি অজ্ঞাত ও মানসিক প্রতিবন্ধী। যেহেতু হাসপাতাল চত্বরে থাকেন, তাই তাঁর পরিচয় ও স্বজনদের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। বিষয়টি জেলা সদর হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারকে (ওসিসি) জানানো হয়েছে।