দীঘিনালায় ইউপিডিএফ কর্মীকে গুলি করে হত্যা

হত্যা
প্রতীকী ছবি

খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) প্রসীত খীসা পক্ষের এক কর্মী খুন হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে কার্বারি টিলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিমুল চাকমা (৩৮) উপজেলার কৃপাপুর তুহীন কার্বারিপাড়ার দেবেন্দ্র চাকমার ছেলে।

বিকেলে উপজেলার পুকুরঘাট এলাকায় গিয়ে লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেলা তিনটার দিকে অস্ত্রধারী কয়েকজন যুবক এসে দোকানপাট বন্ধ করতে বলেন। কিছুক্ষণ পর লোকজন গুলির শব্দ শুনতে পান। পরে লোকজন কার্বারি টিলা টাওয়ারের পেছনের জমিতে এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। কিছুক্ষণ পরে সেখান থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা লাশটি সরিয়ে নিয়ে যান।

পুকুরঘাট এলাকার কয়েকজন দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাঁদের দোকান বন্ধ করার কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা দোকান বন্ধ করে দোকানের ভেতরে বসে থাকেন। কিছুক্ষণ পর গুলির শব্দ শুনতে পান। এরপর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।
ঘটনাস্থল থেকে দুই কিলোমিটার দূরে বানছড়া নির্বাণগিরি অরণ্যকুঠির এলাকায় গিয়ে এই প্রতিবেদক দেখতে পান, পাহাড়ের নিচের জমিতে চাদরে মোড়ানো রক্তাক্ত একটি লাশ পড়ে আছে। লাশটি শিমুল চাকমার বলে নিশ্চিত করেন তাঁর স্ত্রী–সন্তান ও স্বজনেরা। শিমুল চাকমার স্ত্রী মিটেনা চাকমা (৩৪) স্বামীকে হত্যার খবর শুনে কৃপাপুর এলাকা থেকে মেয়ে দৃষ্টি চাকমা (১০) ও ছেলে নীরব চাকমাকে (৫) সঙ্গে নিয়ে কান্না করতে করতে স্বামীর লাশ খুঁজতে এসেছেন।

মিটেনা চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, শিমুল কৃষিকাজ করে সংসার চালাতেন। তিনি ইউপিডিএফের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন কি না, তা জানেন না মিটেনা। আজ দুপুরে কবিরাজের কাছ থেকে তাঁর জন্য ওষুধ আনতে গিয়েছিলেন শিমুল। বাড়ি থেকে বের হওয়ার দুই ঘণ্টা পর স্বামী হত্যার খবর পেয়ে ছুটে এসেছেন।

ইউপিডিএফ (প্রসীত খীসা) পক্ষের উপজেলা সংগঠক সজীব চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের কর্মী শিমুল চাকমা গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাংগঠনিক কাজে পুকুরঘাট এলাকায় গিয়েছিল। সেখানে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) পক্ষের লোকজন ব্রাশফায়ার করে শিমুল চাকমাকে হত্যা করেছেন।’

অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক পক্ষ। এই পক্ষের বাঘাইহাট এলাকার সমন্বয়ক অসীম প্রিয় চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রসীত খীসা পক্ষ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে আমাদের সংগঠন জড়িত নয়।’

দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে আমরা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ খুঁজে পাইনি। নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’