পঞ্চগড়ে সংঘর্ষে নিহত জাহিদ হাসানের লাশ দেখে বাক্‌রুদ্ধ পরিবার

পঞ্চগড়ে সংঘর্ষে নিহত বড়াইগ্রামের প্রকৌশলী জাহিদ হাসান
ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া জামাতের ‘সালানা জলসা’ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত নাটোরের বড়াইগ্রামের বাসিন্দা প্রকৌশলী জাহিদ হাসানের লাশ শনিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে আনা হলে হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তাঁর লাশ দেখে বাক্‌রুদ্ধ হয়ে যান পরিবারের সদস্যরা।

বড়াইগ্রামের জোয়াড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আলী আকবর বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় বড়াইগ্রাম উপজেলার জোয়াড়ি কাছুটিয়া গ্রামে প্রকৌশলী জাহিদ হাসানের লাশ একনজর দেখতে পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও কয়েক গ্রামের কয়েক শ মানুষ জড়ো হন। মরদেহ দেখে সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন। জাহিদ হাসানের লাশ নিয়ে পঞ্চগড় থেকে আসেন তাঁর বাবা আবু বক্কর ও তাঁর দুই চাচা। তাঁরা সবাই আহমদিয়া জামাতের বার্ষিক জলসায় যোগ দিতে শুক্রবার সকাল ১০টায় পঞ্চগড়ে গিয়েছিলেন।

জাহিদ হাসানের বাবা আবু বক্কর প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদ হাসান মাথায় ও মুখে ইটের আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, দুই মেয়ের পর জন্ম হয় একমাত্র ছেলে জাহিদ হাসানের। দিনমজুরি ও স্থানীয় একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নৈশপ্রহরীর চাকরি করে একমাত্র ছেলেকে প্রকৌশলী বানিয়েছেন তিনি। ছয় মাস আগে জাহিদ ঢাকার বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়েছেন। প্রায় চার লাখ টাকা ঋণ করে তিনি তাঁর ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। এখন সেই দেনা পরিশোধের সময় এসেছিল। ছেলের মৃত্যুতে তিনি দেনা পরিশোধ করা নিয়েও চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।

পঞ্চগড় জেলার আহমদ নগরে আহমদিয়া জামাতের ‘সালানা জলসা’ বন্ধের দাবিতে পঞ্চগড় শহরে শুক্রবার সকালে বিক্ষোভ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ কয়েকটি সংগঠনের নেতা–কর্মীরা। শুক্রবার দুপুরে বিক্ষেোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে আরিফুর রহমান (২৮) ও জাহিদ হাসান (২৬)  নিহত হন। সংঘর্ষে পুলিশের ৯ সদস্য ও ২ সাংবাদিকসহ  ৫০ জন আহত হন।