মির্জাপুরে এনএসআইসহ বিভিন্ন পরিচয়ে প্রতারণা, আটক ১

প্রতারণার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আটক হারুন অর রশিদ
ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সহকারী পরিচালকসহ বিভিন্ন পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। ওই ব্যক্তির নাম হারুন অর রশিদ।

হারুন অর রশিদের বাড়ি উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের চুহাত্তর (ঘুগী মৌজা) গ্রামে। তাঁকে আটকের তথ্য নিশ্চিত করেছেন মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রামকৃষ্ণ দাস।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হারুন অর রশিদ উপজেলার সিবিএ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন। প্রায় দেড় বছর আগে তিনি স্থানীয় লোকজনকে জানান, ঢাকায় সচিবালয়ে তাঁর ভালো চাকরি হয়েছে। এর কিছুদিন পর তিনি এলাকাবাসীর সঙ্গে নানা ধরনের প্রতারণা শুরু করেন। নিজেকে কখনো এনএসআইয়ের সহকারী পরিচালক, আবার কখনো সচিবালয়ের বড় কর্মকর্তা দাবি করে লোকজনের কাছ থেকে চাকরি ও বড় ধরনের ব্যবসার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নিতে থাকেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, হারুন অর রশিদ লোকজনকে ভুয়া পরিচয়পত্র দেখাতেন। তিনি বিভিন্ন সময় লোকজনের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। কিন্তু কথামতো চাকরি না হওয়ায় এবং ব্যবসার লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে লোকজনের সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন তাঁর কাছে টাকা ফেরতের দাবি জানান। এসবের মধ্যে বাড়ি যাওয়া বন্ধ করে দেন হারুন।

গত রোববার রাতে পার্শ্ববর্তী দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটী গ্রামে হারুন অর রশিদ তাঁর এক বন্ধুর বাড়ি বেড়াতে যান। খবর পেয়ে কয়েকজন পাওনাদার সেখানে গিয়ে তাঁকে ধরে মির্জাপুর উপজেলার দেওড়া গ্রামে নিয়ে এসে টাকা ফেরত চান। কিন্তু টাকা ফেরত না দিয়ে পরিবর্তে গতকাল সোমবার সকালে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন হারুন। বিষয়টি টের পেয়ে লোকজন তাঁকে ধরে গাছের সঙ্গে বেঁধে পরিবারের সদস্যদের খবর দেন। তবে সারা দিন পরও কেউ যোগাযোগ না করলে স্থানীয় লোকজন ৯৯৯–এ কল করেন। খবর পেয়ে হারুনকে আটক করে নিয়ে যায় মির্জাপুর থানা–পুলিশ।

এসআই রামকৃষ্ণ দাস জানান, হারুন অর রশিদকে নিয়ে আসার পর কয়েকজন পাওনাদার থানায় আসেন। তাঁদের মধ্যে মনির হোসেন নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে যৌথভাবে সোনার ব্যবসার কথা বলে ৭০ লাখ টাকা, জুলমত নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নেন হারুন। এ ছাড়া লুবনা নামের এক নারীকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ১২ লাখ টাকা, জামুর্কী গ্রামের মাহফুজের কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা, যোগিরকোফা গ্রামের জাকির হোসেনের কাছ থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকাসহ নানাজনের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।

অন্য কারও কথা না বললেও মনির হোসেনের কাছ থেকে ৪৬ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন হারুন অর রশিদ। তাঁকে আটকের খবর শুনে পাওনাদারেরা থানায় ছুটে আসছেন। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণের বিষয়টি চলমান বলে থানা থেকে জানানো হয়েছে।