কুয়াকাটায় ভেসে এসেছে ৩৫ ফুট লম্বা মৃত তিমি

কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে ভেসে এসেছে মৃত বেলিন তিমি। শনিবার সকালে
ছবি-সংগৃহীত

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের জাতীয় উদ্যান–সংলগ্ন বেলাভূমিতে একটি মৃত তিমি ভেসে এসেছে। স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ শনিবার সকালে জোয়ারে কুয়াকাটা পর্যটনকেন্দ্রের জিরোপয়েন্ট থেকে দুই কিলোমিটার পূর্ব দিকে সমুদ্রের বেলাভূমিতে এটি ভেসে আসে। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৫ ফুট।

কুয়াকাটা সৈকতের পরিবেশ রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ব্লু-গার্ডের’ সদস্য কে এম বাচ্চু বলেন, তাঁরা খবর পেয়ে সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে যান। গিয়ে দেখেন, এটি ‘বেলিন’ প্রজাতির তিমি। তাঁদের ধারণা, ২০-২৫ দিন আগে তিমিটি মারা গেছে। লেজের দিকের অংশ, পেটসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ পচে-গলে গেছে। দুর্গন্ধ ছড়ানোর কারণে এর পাশে থাকা যাচ্ছিল না। এটির দৈর্ঘ্য ৩৫ ফুট ও প্রস্থ হবে ৬ ফুট। এর আগে একই প্রজাতির একটি তিমি ২০১৭ সালে কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এসেছিল। সেটির দৈর্ঘ্য ছিল ৪৫ ফুট।

উপকূলের পরিবেশ-প্রতিবেশ, জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা ও সমুদ্রের নীল অর্থনীতি নিয়ে কাজ করা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইকো ফিশ-২ অ্যাক্টিভিটির পটুয়াখালী জেলার সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, প্রায় ১৬ প্রজাতির বেলিন তিমি আছে বলে ধারণা করা হয়। তিমিটি পচে-গলে যাওয়ায় পুরুষ না স্ত্রী প্রজাতির, তা নির্ণয় করা কষ্টকর হচ্ছে। তাঁরা মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করার চেষ্টা করছেন।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ, অ্যাকোয়াকালচার অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স অনুষদের সহকারী অধ্যাপক ও সামুদ্রিক প্রাণিবিশেষজ্ঞ মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, বেলিন প্রজাতিটি বঙ্গোপসাগরে সাধারণত দেখা যায় না। কুয়াকাটা–সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর থেকে কেন এ মৃত তিমি ভেসে এসেছে, সেটি খুঁজে বের করা দরকার।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, সাগরের কোনো অংশজুড়ে অক্সিজেনের অভাব, প্রচুর দূষণ দেখা দিয়েছে। এটি তিমিটির মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তা ছাড়া সমুদ্রে প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক ফেলা হয়। খাদ্যের সঙ্গে প্লাস্টিক খেয়ে পাকস্থলীতে জমেও তিমির মৃত্যু হতে পারে। এসব চিহ্নিত করতে হলে এ নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার।

কলাপাড়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি। সৈকত থেকে মৃত তিমিটিকে অপসারণ করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’