বরিশালে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে তিনজনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ১৯২
বরিশাল বিভাগে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ছয়টা থেকে আজ বুধবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে বিভাগে ৩৩ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হলো।
একই সময়ে বিভাগের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে নতুন করে ১৯২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৮৩৭। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন ভোলার লালমোহন উপজেলার বাসিন্দা আবদুল হক (৭৫), পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার মো. রফিকুল ইসলাম (৩৬) ও বরগুনার বেতাগী উপজেলার হাসিনা বেগম (৬০)। গতকাল দুপুর থেকে রাতের মধ্যে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয়। সোমবার একই হাসপাতালে আরও দুই নারীর মৃত্যু হয়েছিল।
বরিশাল বিভাগে জুলাই থেকে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব মারাত্মক রূপ নেয়। জুলাইয়ে বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসেন ৪ হাজার ৮৬৭ জন। এক মাসে মৃত্যু হয় ৯ জনের। আগস্টে তা আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। আগস্টের ২২ দিনে বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা আগের মাসের দ্বিগুণ হয়ে ৮ হাজার ৩১১-এ দাঁড়িয়েছে। মারা গেছেন ২১ জন। এর আগে ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত বিভাগে ডেঙ্গু রোগী ছিলেন মাত্র ৪৩৩ জন। মৃত্যু হয়েছিল দুজনের।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। অধিকাংশ রোগীই স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্ত ও মৃত ব্যক্তিদের অধিকাংশই গ্রামের বাসিন্দা। প্রত্যন্ত গ্রামেও ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী মশার বিস্তৃতি ঘটেছে। এ জন্য আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালে বরিশালে প্রথম ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। এর আগে বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের ইতিহাস নেই। ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আক্রান্ত হয়েছিলেন ১০ হাজারে বেশি রোগী। এরপর ২০২২ সালে পুনরায় প্রকোপ দেখা দেয় এবং ১১ জন মারা যান। কিন্তু অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এবার আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমে বেড়েই চলেছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।