বই–খাতা পড়ে আছে টেবিলে, চেয়ারটাও খালি, আর কখনো পড়তে বসবে না আলভী
চট্টগ্রাম নগরের আতুরার ডিপো এলাকার বাড়িটিতে এখনো টেবিলের ওপর ছড়িয়ে–ছটিয়ে আছে বই–খাতা। চেয়ারটাও রয়ে গেছে সেভাবে। তবে বাড়ির একমাত্র ছেলে আলভী আহমেদ আর কখনো পড়তে বসবে না। আগামী বছর এসএসসি পরীক্ষায় বসার কথা ছিল তার। তবে এখন সে এসবের ঊর্ধ্বে। আজ শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৫ বছর বয়সী এই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল আলভী নিজেই। কোনো যানবাহনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়নি তার মোটরসাইকেলের। প্রচণ্ড গতির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মোটরসাইকেলে আলভীর সঙ্গী ছিল তারই বয়সী কিশোর আশরাফুল আলম। এ ঘটনায় সে–ও গুরুতর আহত হয়েছে। চট্টগ্রামের বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আলভী যে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল, সেটি তার নয় বলে দাবি করেছেন তার খালা সেলিনা আক্তার। ছেলেটির এমন মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছেন না তাঁরা। আলভীর বাবা ইকবাল হোসেন প্রবাসী। ছেলের মৃত্যুর খবর জানার পর বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা রুজি আক্তার।
আলভীর খালা সেলিনা আক্তারও প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। সেলিনা আক্তার নিজেকে সামলে কোনোমতে বলেন, আলভী নগরের রহমানিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল। এবার তার এসএসসি পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। তারা ছিল তিন বোন ও এক ভাই। আলভীর আর পরীক্ষায় বসা হলো না। সব শেষ হয়ে গেল।
দুর্ঘটনার বিষয়ে মদুনাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মো. মহিউদ্দিন সুমন বলেন, আলভী মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল। পেছনে বসেছিল আশরাফুল আলম। প্রচণ্ড গতিতে এসে গতিরোধকের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারায় আলভী। তারা ছিটকে চলে যায় অনেকটা দূরে। এরপর পাশের এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলভীকে মৃত ঘোষণা করেন। পাশাপাশি আশরাফুলকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়।
পুলিশ জানায়, আহত আশরাফুল নগরের বন গবেষণাগার উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার বাবা মো. শাহজাহানও প্রবাসী। আশরাফুল ও আলভীর বাড়ি একই এলাকায়।