রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলাম প্রতিষ্ঠার সুযোগকে সম্মিলিতভাবে কাজে লাগাতে হবে: সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘জীবন উৎসর্গকারী ছাত্র-জনতার রক্তকে অর্থবহ করার দায় আমাদের সবার। এর মধ্য দিয়ে ৫৪ বছর পর রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলামকে কার্যকরভাবে প্রতিষ্ঠার একটি ঐতিহাসিক সুযোগ এসেছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না।’ আজ বৃহস্পতিবার বরিশাল সদর উপজেলায় চরমোনাই দরবার শরিফের মাহফিলের দ্বিতীয় দিনে উলামা-মাশায়েখ ও দ্বীনদার বুদ্ধিজীবী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হননি উল্লেখ করে সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম আরও বলেন, ‘আমার মন্ত্রী হওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। তবু আমাদের সব প্রচেষ্টার লক্ষ্য একটাই—দেশকে একটি ভালো অবস্থানে নেওয়া। যারা একসময় দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়ে বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছে, তারাই আবারও ক্ষমতায় ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। কিন্তু এ দেশের মানুষ নতুন শাড়িতে পুরোনো বউ দেখতে চায় না। আগামীর নির্বাচনে পরিবর্তন আসতেই হবে।’
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালেদ হোসাইন। তিনি বলেন, ‘চরমোনাই পীর সাহেবের আন্তরিকতা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঐকান্তিক চেষ্টায় উপদেষ্টা পরিষদে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। আমাকে নিয়ে আপনাদের প্রত্যাশা বড়; তবে আমার সীমাবদ্ধতা আছে। সেই সীমার মধ্যেই দায়িত্ব পালন করতে হয়।’
আ ফ ম খালেদ হোসাইন আরও বলেন, ধর্মের ব্যাখ্যায় ওলামায়ে কেরামের কথাই চূড়ান্ত। কেউ ইসলাম অবমাননা করলে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। তবে কেউ আইন নিজের হাতে নেবেন না। বাংলাদেশে কাউকে কোনোভাবে ধর্ম অবমাননার সুযোগ দেওয়া হবে না।
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা সতর্ক করে বলেছেন, তোমরা কখনো জালেমের দিকে ঝুঁকে যেয়ো না। আসন্ন নির্বাচনে কোনো প্রলোভন বা ভয় দেখিয়ে যেন কোনো জালেমকে সুযোগ দেওয়া যাবে না।’
সমাবেশে দলের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান অস্বীকারকারীদের সরকার অতিমাত্রায় গুরুত্ব দিয়েছে। সরকারের ভুল নীতির কারণে নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি। অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। এ বাস্তবতায় আমরা নির্বাচন নিয়ে গভীরভাবে শঙ্কিত।’
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম, মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা ইমতেয়াজ আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, কে এম আতিকুর রহমান প্রমুখ।
সম্মেলনে জাতীয় উলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের নতুন সভাপতি হিসেবে মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদের নাম ঘোষণা করা হয়।