মোকতাদিরসহ ২৪০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে করা বিস্ফোরক আইনের মামলা প্রত্যাহার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ ২৪০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে করা মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাদী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেন। আদালতের বিচারক আফরিন আহমেদ আবেদনটি মঞ্জুর করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কামরুজ্জামান মামুন ও আইনজীবী আবদুর রহিম প্রথম আলোকে বলেন, মামলায় তথ্যগত অনেক ভুল ছিল। নির্দোষ অনেক ব্যক্তিসহ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই, এমন অনেক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। সাক্ষীরা বাদীকে বিভিন্ন ভুল তথ্য দিয়েছেন। বাদী এসব উপলব্ধি থেকে আজ সকালে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালত মামলা প্রত্যাহারের আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
জেলা শহরের কাজীপাড়ার বাসিন্দা শিহাব উদ্দিন চৌধুরী গতকাল বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিস্ফোরক আইনে মামলাটি করেন। মামলায় উবায়দুল মোকতাদিরকে প্রধান আসামি করে ২৪০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
এ নিয়ে সাবেক মন্ত্রী মোকতাদিরের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৯টি মামলা হয়েছিল। তবে একটি মামলা প্রত্যাহার হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে এখন ৮টি মামলা থাকল। এগুলোর মধ্যে পাঁচটি হত্যা, একটি গুম ও দুটি বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে হওয়া মামলা।
উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।
প্রত্যাহার করা এই মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডিউক চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক মনির হোসেন, সদস্য ও সাবেক ভিপি হাসান সারওয়ার, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উবায়দুল মোকতাদিরের ব্যক্তিগত সহকারী এম এ এইচ মাহবুব আলম, আরেক ব্যক্তিগত সহকারী আবু মুসা আনসারী, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন, আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু আসিফ আহমেদ, ঠিকাদার হিরো মিয়া, যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি উম্মে হানি, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আলী আজম, সাংগঠনিক সম্পাদক মনির হোসেন, সদর উপজেলা যুব ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মো. রাসেল, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা আফরিন প্রমুখ।
মামলার আরজিতে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট ১ থেকে ৫ নম্বর আসামিদের নির্দেশে অন্যরা বাদী, সাক্ষীসহ বেশ কয়েকজনের ওপর হামলা করেন। এতে তাঁরা বেশ কয়েকজন আহত হন। আসামিরা ব্যাংক এশিয়া, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয়, নন্দিতা কালার ল্যাবসহ বিভিন্ন স্থাপনায় পেট্রলবোমা ও ককটেল মেরে আনুমানিক পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি করেন।
মামলার বাদী শিহাব উদ্দিন চৌধুরীর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে এক আইনজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মামলার বাদী ঢাকায় থাকেন। একটি পক্ষ তাঁকে বাদী করে মামলাটি করিয়েছিল। মামলায় ওই পক্ষের সঙ্গে ব্যক্তিগত বিরোধ থাকা ব্যক্তিদের হয়রানি করতে আসামি করা হয়েছিল।