গাজীপুরে ছিনতাই-ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা হতাশাজনক দাবি করে বিক্ষোভ
গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও এর আশপাশের এলাকায় ছিনতাই-ডাকাতি প্রতিরোধে পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকার ‘হতাশাজনক’ দাবি করে এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে। ‘টঙ্গীর সর্বস্তরের জনগণ’-এর ব্যানারে আজ মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে টঙ্গীর বিভিন্ন মসজিদের ইমামসহ স্থানীয় লোকজন অংশ নেন।
এ কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘শিশু বক্তা’ হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলাম মাদানী। পরে বিক্ষোভকারীরা টঙ্গী পূর্ব থানা-পুলিশের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়ে ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ কামনা করেন।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, রাত হলেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও এর আশপাশের এলাকায় ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়। ডাকাত ও ছিনতাইকারীরা সাধারণ মানুষের ওপর হামলে পড়ে। রামদা, চাপাতি ও রডসহ বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা, মুঠোফোনসহ অন্যান্য মালামাল। এ সময় আহত হচ্ছেন অনেক যাত্রী। বিভিন্ন সময় খুন হচ্ছেন লোকজন; কিন্তু এসব অপরাধ নির্মূল বা এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্থানীয় প্রশাসনের অবস্থান বা ভূমিকা খুবই হতাশাজনক। তাই তাঁরা বাধ্য হয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন। যেকোনো মূল্যে তাঁরা এসব অপরাধের সমাধান চান।
ধর্মীয় বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানী বলেন, রাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যেসব যাত্রী বা বক্তা যাতায়াত করেন, রাস্তায় জ্যাম লাগার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁদের গাড়িতে বাঁশ, রামদা ও চাপাতি দিয়ে প্রায় নিয়মিতই সাত-আটজন লোক ডাকাতি করে। কয়দিন আগে আমার নিজের গাড়িতেই ইট মারছে। একই ঘটনা অসংখ্য বক্তার সঙ্গে ঘটছে। একটি মহাসড়কে এ রকম প্রকাশ্যে ডাকাতির ঘটনা চরম নিরাপত্তাহীনতা ও উদ্বেগের বিষয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
রফিকুল ইসলাম মাদানী আরও বলেন, ‘আমরা যখন এসব (ডাকাতি-ছিনতাই) নিয়ে অনলাইনে লেখালেখি করি, তখন আওয়ামী লীগের লোকজন হাসাহাসি করে। তারা বলে, “হুজুর আপনারাই তো সরকার পতন ঘটিয়েছিলেন।” তাই আমি প্রশাসনকে বলতে চাই, আপনারা নতুন সরকারকে হাস্যকর পরিস্থিতিতে ফেলবেন না। নিরাপত্তায় ব্যর্থতা হলে ব্যর্থতার দায় নিয়ে আপনাদের সরে যাওয়া উচিত। আমি মনে করি, সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আপনার দায়িত্ব।’
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (টঙ্গী জোন) এন এম নাসিরুদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়তই ছিনতাইকারী ও ডাকাত চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার ধরছি। গত দেড় মাসে প্রায় ১৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে; কিন্তু তারপরও যেহেতু ঘটনা ঘটছে, তাই অনেকে হতাশ হতেই পারেন। তবে আমরা অপরাধ নির্মূলে সাধ্যমতো চেষ্টা করছি।’