যাদের জাত-ধর্ম নেই, তারাই শ্রমিকদের পিটিয়ে মেরেছে: মন্ত্রী আবদুর রহমান

মধুখালীতে সামাজিক সম্প্রীতি কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আবদুর রহমান। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার মাল্টিপারপাস মিলনায়তনেছবি: প্রথম আলো

যাঁদের কোনো জাত নেই, ধর্ম নেই, তাঁরাই দুই শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন ফরিদপুর-১ (মধুখালী-বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আবদুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে, তারা মুসলিমও না, হিন্দুও না।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুরের মধুখালীতে সামাজিক সম্প্রীতি কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। দুপুর ১২টায় উপজেলার মাল্টিপারপাস মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন।

মন্ত্রী আবদুর রহমান বলেন, অপরাধীরা মনে করেছে, এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে তারা পার পেয়ে যাবে। কিন্তু তার কোনো সুযোগ নেই। তাদের বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসিতে ঝুলিয়ে বিচার করা হবে। ইতিমধ্যেই এ ঘটনায় ১৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সমাজে কে হিন্দু, কে মুসলমান, কে কোন জাতি—এটা বড় বিষয় নয়, আমরা সবাই মানুষ। কোনো মানুষই এ ঘটনা মেনে নিতে পারছে না। সবাই শোকাহত পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছে।’

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা অনেক কষ্ট করছেন হত্যাকাণ্ডের তথ্য উদ্‌ঘাটন করার জন্য। কেউ কেউ ঘটনাটিকে অন্যদিকে প্রভাবিত করার জন্য হয়তো চেষ্টা চালাচ্ছেন। সেদিকে আপনারা সতর্ক থাকুন। কোনোভাবেই এই শান্তিপ্রিয় এলাকাকে অশান্ত করতে দেওয়া হবে না। যে ঘটনাটি ঘটেছে, তার সঠিক বিচার শিগগিরই হবে। নিহত দুই ভাইয়ের মা-বাবা তা দেখে যেতে পারবেন।’

স্থানীয় এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, মধুখালীতে দল কীভাবে চলছে, কোন নেতা, কোন কর্মী, কতটা সক্রিয়, তার প্রমাণ দেওয়ার সময় এসেছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘লোকজনকে বুঝিয়ে বলুন যে দুই শ্রমিক হত্যার সঠিক বিচার শিগগিরই হবে। এ নিয়ে আবেগী হয়ে আপনারা কোনো উসকানি দেবেন না। এলাকায় পাহারা দিন। প্রয়োজনে প্রশাসনকে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন।’

সভায় উপস্থিত বিজিবির কর্মকর্তাদের উদ্দেশে আবদুর রহমান বলেন, ‘আপনারা সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি করেন। এখানেও তেমন কিছু করুন, যাতে কোনো অপরাধী পালিয়ে যেতে না পারে।’ তিনি আরও বলেন, কোনো অবস্থায় শান্ত মধুখালীকে অশান্ত করতে দেওয়া হবে না। মঙ্গলবার এমন একটি চেষ্টা হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসন ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে। এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামনুন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে নিহত দুই ভাইয়ের বাবা শাহাজাহান শেখ, সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) মিজানুর রহমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফরিদপুরের উপপরিচালক শাহাবুদ্দিন আহমেদ, মধুখালী পৌরসভার মেয়র মোর্শেদ রহমান, উজানদিয়া মডেল মসজিদের ইমাম আলম হোসেন, মধুখালী পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি সুবাস রায় প্রমুখ বক্তব্য দেন।