বাগাতিপাড়ায় বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা হলেন উপজেলা চেয়ারম্যান

বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনসংগৃহীত

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে লড়াই করে এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন পেয়েছেন ১৪ হাজার ৬৫৭টি ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আসলাম উদ্দিন (শালিক পাখি প্রতীক) ভোট পেয়েছেন ১৩ হাজার ৬৪৯টি। তিনি (আসলাম) নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের সমর্থক।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জাহাঙ্গীর হোসেনের প্রতিদ্বন্দ্বী হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অবুল হোসেন, সহসভাপতি শরিফুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগের আরও জ্যেষ্ঠ নেতারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাগাতিপাড়া উপজেলা বিএনপির শীর্ষ পদে থেকে এবারের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় থেকেই আলোচনায় আসেন জাহাঙ্গীর হোসেন। এতে দলটি থেকে চাপের মুখে পড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনটিতে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় তাঁকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবু তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়াননি। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অবুল হোসেন, সহসভাপতি শরিফুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগের আরও জ্যেষ্ঠ নেতারা।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ভোটের মাঠের লড়াইয়ে বেশ বাধায় পড়েন জাহাঙ্গীর। চলতি মাসের শুরুতে উপজেলার সোনাপুর বাজারে গণসংযোগের সময় দুর্বৃত্তরা তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছিল। এতে গুরুতর আহত হয়ে তিনি নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে সুস্থ হয়ে আবারও গণসংযোগে নামেন তিনি। নির্বাচনের দুই দিন আগেও তাঁর প্রধান সমন্বয়কারীসহ সাত কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। একজনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। এমনকি ভোটের দিনও তাঁর তিন কর্মীকে মারধর করে আহত করা হয়; যাঁদের দুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আরও পড়ুন

শত প্রতিকূলতার মধ্যে নির্বাচনে লড়াই করেছেন বলে জানিয়ে এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় আছি। এলাকার লোকজন আমাকে নির্বাচনে দেখতে চেয়েছিলেন। তাই দলের সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। ভোটাররা ভালোবেসে আমাকে বিজয়ী করেছেন। পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কর্মীরা আমি ও আমার কর্মীদের ওপর বারবার নির্যাতন চালিয়েছে। আমি প্রতিশোধ নিইনি। এখন বিজয়ী হয়েছি। এখন মনে করি, সবাই আমাকে ভোট দিয়েছেন। আমি সবার সহযোগিতা নিয়ে সমগ্র উপজেলাবাসীর জন্য কাজ করব।’


উপজেলাটিতে ভাইস চেয়ারম্যান পদে উড়োজাহাজ প্রতীক নিয়ে কাজী আমানুর রহমান ১৪ হাজার ২৪৫ ভোট এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কলস প্রতীক নিয়ে মিতা বেগম ১৮ হাজার ৫৭৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। উপজেলায় মোট ১ লাখ ১৫ হাজার ৯৮৪ জন ভোটার। এর মধ্যে গতকাল ভোট দিয়েছেন ৫০ হাজার ১৮২ জন।

আরও পড়ুন