ভারত থেকে এসে বিয়ে, সন্তানের জন্মের আগে পালিয়েছেন স্বামী—অভিযোগ স্ত্রীর

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন এক স্ত্রী। সাহনাজ খাতুন (২৫) নামের ওই তরুণী বছরখানেক আগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম থেকে বাংলাদেশের টাঙ্গাইলে এসে আলামিন আমের এক যুবককে বিয়ে করেন। তাঁর ১৪ দিনের নবজাতক আছে। সন্তানের জন্মের আগে তাঁকে রেখে আলামিন পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ সাহনাজের।

গতকাল সোমবার সাহনাজ খাতুন সখীপুর থানায় গিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। নির্যাতন করে স্বামী পালিয়ে যাওয়ায় ১৪ দিনের নবজাতককে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে জানান ওই তরুণী।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে সখীপুর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের আমির আলীর ছেলে আলামিন সৌদি আরবে যান। তখন তিনি দুই সন্তানের জনক ছিলেন। সেখানে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের ওই তরুণীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাঁদের প্রেম হয়। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে দেশে ফেরেন আলামিন। এরপর গত বছরের ২১ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের তরুণী সাহনাজ খাতুন পাসপোর্ট ছাড়াই টাঙ্গাইলের সখীপুর চলে আসেন। আলামিন বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে ওই তরুণীকে উপজেলার বড়চওনা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় রেখে বিয়ে করেন। দেশে ট্রাক চালিয়ে তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন। মাসখানেক আগে ভাড়া বাসায় ভারতীয় ওই স্ত্রীকে রেখে পালিয়ে যান আলামিন। ১৪ দিন আগে ছেলেসন্তানের জন্ম দেন তাঁর স্ত্রী। কোনো উপায় না পেয়ে সোমবার সখীপুর থানায় গিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন ওই তরুণী।

ওই তরুণী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভারত থেকে আসার সময় চার লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে এসেছিলাম। আলামিন ওই টাকা ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ করেছেন। পালিয়ে যাওয়ার আগে আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছেন। আমি আর দেশে ফিরে যাব না। সেখানে ফেরার মতো পরিস্থিতি নেই। আলামিন ও তাঁর সন্তানকে নিয়ে আমি বাংলাদেশেই সংসার করতে চাই।’

বড়চওনা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, ‘আলামিন বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন। আমরা নবজাতকসহ ওই ভারতীয় তরুণীকে সাহায্য–সহযোগিতা করছি। আলামিনকে খুঁজে পেলে মেয়েটি যাতে সংসার করতে পারে, সে ব্যবস্থা করা হবে।’

সখীপুর থানার উপপরিদর্শক সুকান্ত রায় প্রথম আলোকে বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়ে মেয়েটিকে দেখতে বড়চওনা এলাকার ওই বাসায় গিয়েছিলেন তিনি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যকে ওই তরুণীর ভরণপোষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পলাতক আলামিনকে খোঁজার চেষ্টা চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।