৩০ কেজির বাগাড়ের সঙ্গে নদীর তলদেশ থেকে উঠে এল জেলের লাশ

সিলেট জেলার মানচিত্র

অক্সিজেনের সিলিন্ডার পিঠে বেঁধে নদীর গভীরে গিয়ে মাছ শিকার করেন দেলোয়ার আহমদ (৩৮)। নদীর তলদেশ থেকে নিয়ে আসেন বড় বড় মাছ। গতকাল বৃহস্পতিবারও একই উদ্দেশ্যে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীতে নেমেছিলেন তিনি। এবারও ৩০ কেজি ওজনের বাগাড় ধরেছেন তিনি, কিন্তু নিজে পানির ওপর উঠতে পারেননি। সহযোগীরা যখন সংকেত পেয়ে দেলোয়ারকে পানির ওপর টেনে তোলেন, তখন সেখানে ছিল তাঁর নিথর দেহ। সঙ্গে বাঁধা ছিল বাগাড়টিও।

গতকাল বিকেল সাড়ে চারটার দিকে জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর কুরিয়ারবন্দ এলাকা থেকে দেলোয়ারের লাশ উদ্ধার করেন অন্য জেলেরা। দেলোয়ার আহমদ জকিগঞ্জের বারঠাকুরী ইউপির আমলশীদ গ্রামের মো. ইসলাম উদ্দিনের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেলোয়ারসহ তিনজন জেলে গতকাল বিকেলে কুশিয়ারা নদীতে যান। সিলিন্ডার লাগিয়ে নদীর গভীরে গিয়ে রশির ফাঁদ দিয়ে মাছ শিকারে দক্ষ ছিলেন তিনি। পানিতে নামার সময় দেলোয়ারের শরীরে রশি বাঁধা থাকে। অন্যরা নৌকায় থেকে ওই রশি ধরে টেনে তোলার কাজ করেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মাছ ধরার সংকেত পেয়ে বাগাড়টি টেনে তোলেন সহযোগীরা। মাছটির লেজের সঙ্গে রশি দিয়ে বাঁধা ছিল দেলোয়ারের নিথর দেহ। তাঁর অক্সিজেনের মাস্ক বিচ্ছিন্ন ছিল। পরে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাসুদ বলেন, এলাকায় এভাবে মাছ ধরার বিষয়টি তিনি প্রথম শুনেছেন। ৩০ কেজি ওজনের বাগাড়টি বেশ শক্তিশালী। মাছটি ধরার পর ধস্তাধস্তি করতে গিয়ে কোনোভাবে অক্সিজেনের মাস্ক মুখ থেকে খুলে থাকতে পারে। এতেই পানির গভীরে শ্বাসরোধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মাছটি তাঁর শরীরের সঙ্গে বাঁধা থাকায় তিনি আর ডাঙায় উঠতে পারছিলেন না। ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের কোনো অভিযোগ নেই। তাঁদের আবেদনের ভিত্তিতে মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তর করা হয়েছে।