হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে সাত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা
নোয়াখালীতে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক ও পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠানসহ সাত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে পিটিশন মামলা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের বিএনপিপন্থী আইনজীবী মিনারুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই মামলা করেন।
অভিযোগটি ৩০ দিনের মধ্যে প্রাথমিক অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। জেলা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী গুলজার হোসেন প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক, পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠান, উপপরিদর্শক (এসআই) অপু বড়ুয়া, এসআই কামাল হোসেন, কনস্টেবল মো. রাশেল, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবু তালেব, মুন্সি রুবেল বড়ুয়া।
চলতি বছর সুধারাম থানায় সাত বছরের একটি কন্যাশিশুকে মামলার অভিযোগের আসামি করা হয়।
শিশুটিকে জামিন এবং মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে নোয়াখালী শিশু আদালতে আবেদন করেন আইনজীবী মিনারুল ইসলাম। আদালত তাঁর আবেদন আমলে নিয়ে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হককে তিরস্কার করেন। এ ঘটনায় মিনারুলের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন ওসি।
মামলার বাদী আইনজীবী মিনারুল ইসলাম অভিযোগ করেন, গত ১৯ জুলাই আবদুল করিম নামের এক বিএনপির নেতাকে দেখতে সুধারাম থানায় যান মিনারুল ইসলাম। তখন ওসি জাহেদুল হক তাঁকে আটকে রাখেন এবং পরদিন একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠান। আটকের পর আনুমানিক রাত ১২টার দিকে থানার দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে পুলিশ সদস্যরা তাঁকে মারধর করে মারাত্মকভাবে আহত করেন। খবর পেয়ে তাঁর আত্মীয়-স্বজন থানায় দেখা করতে গেলে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে উপপরিদর্শক (এসআই) অপু বড়ুয়া ও কামাল হোসেন তাঁদের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় ছাত্র আন্দোলনের মামলায় চালান দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। টাকা না দেওয়ায় তাঁকে ২০ জুলাই বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। এ সময় তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া হবে না শর্তে তাঁর আত্মীয়ের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) কামাল হোসেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাদীর অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মনগড়া বলে উল্লেখ করেন (ওসি) মীর জাহেদুল হক ও পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠান। প্রথম আলোকে তাঁরা বলেন, ওই আইনজীবীকে পুলিশের ওপর হামলার একটি মামলার আসামি হিসেবে আটক করা হয়েছিল। থানায় তাঁর সঙ্গে কোনো দুর্ব্যবহার করা হয়নি। সম্পূর্ণ সুস্থভাবে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।