নারীকে অপহরণের পর নির্যাতনের অভিযোগ, ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

অপহরণ
প্রতীকী ছবি

জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নে বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) কর্মরত এক নারীকে অপহরণ করে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শরিফপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। মামলার এজাহারে দাবি করা হয়েছে, ওই নারীর স্বামী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এর আগে গত বুধবার ওই নারীকে আহত অবস্থায় নেত্রকোনার পূর্বধলা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

মামলার আসামিরা হলেন শরিফপুর ইউপির চেয়ারম্যান আলম আলী (৪০), ওই নারীর স্বামী মো. মামুন মিয়া (২৬), মো. চাঁন মিয়া (৬০), দিপা বেগম (৩০) ও মো. মমিন মিয়া (৪২)। আসামিদের সবার বাড়ি শরিফপুর ইউনিয়নে। গতকাল রাতে ওই নারীর মা বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় মামলা করেছেন।

ভুক্তভোগী নারীর স্বজনেরা বলেন, মো. মামুন ইউপি চেয়ারম্যান আলম আলীর চাচাতো ভাই। মামুন বিয়ের কথা বলে ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে মামুন ওই নারীকে বিয়ে না করে নানারকম টালবাহানা শুরু করেন। এ ঘটনায় ৩ মাস আগে স্থানীয়ভাবে একটি সালিস হয়। ওই সালিসে মামুনের সঙ্গে ওই নারীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে মামুন ওই নারীর ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন। পরে নির্যাতনের অভিযোগে গত ২১ জুন ওই নারী বাদী হয়ে সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেন। একপর্যায়ে ওই নারী বাবার বাড়িতে চলে আসেন।

গতকাল রাতে হওয়া ওই মামলায় বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট ওই নারীকে জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শরিফপুর ইউনিয়ন থেকে মামুন অপহরণ করে নিয়ে যান। পরে ওই নারীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মামুন ও তাঁর সহযোগীরা শারীরিক নির্যাতন চালান। গত বুধবার ওই নারীকে মামুন ও তাঁর সহযোগীরা নেত্রকোনার পূর্বধলার একটি নির্জন স্থানে আহত অবস্থায় ফেলে রেখে যান। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে এবং আহত অবস্থায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

ওই নারীর মা বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েকে প্রতিদিন শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল মামুন। চেয়ারম্যানের প্রভাবে মামুন এসব কাজ করে আসছিল। প্রথম দিকে প্রতিবাদ করা হয়েছিল। কিন্তু মামুনের নির্যাতন তাতেও বন্ধ হয়নি। কিছুদিন আগে নির্যাতনের অভিযোগে থানায় মামলা করলে মামুন ও চেয়ারম্যান আলম আলী ক্ষিপ্ত হয়ে এ কাজ করেছেন।’

গতকাল মামলা হওয়ার পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান এবং অভিযুক্ত মামুন গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁদের দুজনের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরও বন্ধ পাওয়া গেছে। তাই অভিযোগের বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, এক নারীকের অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগে গতকাল রাতে মামলা হয়েছে। মামলায় পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।