গাইবান্ধায় জমি নিয়ে বিরোধে সাঁওতালদের ওপর হামলা, আবারও অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাবিরাট এলাকায় গত শুক্রবার সাঁওতালদের ওপর হামলা হয়ছবি : ভিডিও থেকে নেওয়া

জমি নিয়ে বিরোধে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাবিরাট এলাকায় আবারও সাঁওতালদের ওপর হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় হামলায় আহত এক সাঁওতাল গত রোববার রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এতে উপজেলার রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তাঁর লোকজন হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

এর আগে গত ৩ জানুয়ারি উপজেলার বিরাট এলাকায় ফিলিমোনা হাসদা (৫৫) নামের এক সাঁওতাল নারীকে মারধর করেন চেয়ারম্যান রফিকুলের লোকজন। সেই ঘটনায় পুলিশ ওই চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন। ওই ঘটনার পর রফিকুল ইসলামকে উপজেলা বিএনপির সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

সাঁওতালদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শুক্রবার দুপুরে একটি বিরোধপূর্ণ জমিতে আমন ধান লাগাতে গেলে সাঁওতালদের ওপর হামলা চালান চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তাঁর লোকজন। এতে সাঁওতালদের তিনজন আহত হন। তাঁরা হলেন রাজাবিরাট এলাকার শ্যামবালা হেমব্রম (৪৫), তাঁর ছেলে বিশ্বনাথ সরেন (২৫) ও নাতি জয়ন্ত হাসদা (১৯)। তাঁদের মধ্যে বিশ্বনাথ সরেন মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি দুজন স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ ঘটনায় চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গোবিন্দগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শ্যামবালা হেমব্রম। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বাবা হেকিম মন্ডল ও তাঁর ভাইয়েরা তিন একরের বেশি জমি জাল দলিল করে ভোগদখল করে আসছেন। সেই জমিতে শুক্রবার বিকেলে তাঁরা ধান রোপণ করতে যান। রফিকুল চেয়ারম্যান, তাঁর ভাই শফিকুল ইসলাম ও মেজবাউল ইসলাম দলবল নিয়ে ধান চাষে বাধা দেন। তাঁরা লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান। হামলায় তাঁর বড় ছেলে বিশ্বনাথ সরেন মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এই ঘটনার বিচার দাবি করেন তিনি।

তবে সাঁওতালদের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। তিনি মুঠোফোনে বলেন, ‘এই জমি আমার বাবা হাকিম মন্ডল ৩৫ বছর আগে হোপনা হেমব্রমের কাছ থেকে কিনে নেন। সেই থেকে আমরা চাষবাদ করে আসছি। এই জমির মালিকানাসংক্রান্ত সব বৈধ কাগজপত্র আমাদের রয়েছে। উল্টো সাঁওতালরা আমাদের জমিতে ধান রোপণ করতে যান। এতে বাধা দিলে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাকি হয়। এতে আমার ভাই শফিকুল ইসলাম মাথায় আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।’

গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বুলবুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় সাঁওতালরা থানায় একটি অভিযোগপত্র দিয়েছে। আমি হাতে পেয়েছি রোববার গভীর রাতে। ঘটনাটি তদন্ত করে মামলাটি নথিভুক্ত করা হবে।’