বেহাল পড়ে আছে মাগুরার শ্রীপুরের ডিসি ইকোপার্ক 

মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার গড়াই নদের পাড়ে অবস্থিত ডিসি পার্কে স্থাপন করা বেহাল খেলাধুলার সামগ্রী। গত মঙ্গলবারছবি: প্রথম আলো

‘এখানে যখন পার্কটা হয়েছিল, আমরা আশা করেছিলাম, এখানে ঘুরতে বাইরে থেকে লোকজন আসবে, পর্যটনকেন্দ্র তৈরি হবে। এটা ঘিরে গ্রামের মানুষের কর্মসংস্থান হবে। কিন্তু এসবের কিছুই হয়নি। এখন এমন পরিস্থিতি যে দিনের বেলায়ও মানুষ আসতে ভয় পায়।’

মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার গড়াই নদের পাড়ে অবস্থিত ডিসি পার্ক সম্পর্কে এ কথা বলছিলেন এলাকার এক তরুণ স্বরূপ বিশ্বাস। ২০১৮ সালের দিকে উপজেলার দ্বারিয়াপুর ইউনিয়নের গঙ্গারামখালী গ্রামে গড়াই নদের পাশে ‘ডিসি ইকোপার্ক রিভারভিউ কটেজ’ নামের এই বিনোদনকেন্দ্র চালু করা হয়। তবে চালুর পর সঠিকভাবে পরিচালনা ও দেখভাল না করার কারণে এটি এখন বেহাল।

গত মঙ্গলবার পার্কে গিয়ে দেখা যায়, পার্কে একটি কটেজ রয়েছে, যার ছাদের টালি খসে পড়েছে। ভেতরের দরজা–জানালাসহ অন্যান্য আসবাব ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি পার্কে শিশুদের বিনোদনের জন্য স্থাপন করা সরঞ্জামও বেহাল। শৌচাগারও নষ্ট হয়ে গেছে। আর বনজঙ্গলে ভরে গেছে চারপাশ।

ওই গ্রামের বাসিন্দা চয়ন বিশ্বাস বলেন, ‘এটা নিয়ে আমাদের গ্রামের মানুষ অনেক আশা করেছিল। কিন্তু সে রকম কিছুই হয়নি। এখানের পরিস্থিতি এমন যে আমরা আসতে ভয় পাই। কারণ, দিনের বেলাতে এখানে এলেও লোকজন সন্দেহ করে যে হয়তো মাদক সেবন করতে এসেছে।’

পার্কে স্থাপন করা নামফলক থেকে জানা যায়, এটি উদ্বোধন করা হয় ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই। উদ্বোধন করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। সে সময় শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দায়িত্বে থাকা মো. আহসান উল্লাহ শরিফী এর পরিকল্পনা করেন। প্রায় সাত একর জমির ওপর দ্বারিয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় এটি বাস্তবায়ন করা হয় বলে জানা গেছে।

দ্বারিয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হামজা মোল্লা গতকাল বুধবার জানান, ‘যত দূর জানি, ওই এলাকায় প্রায় ১৬ দশমিক ৭২ একর খাসজমি রয়েছে, যার একটি অংশে পার্ক নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে এটি দেখভাল করার জন্য কোনো লোক নেই। এ কারণে অযত্নে সব নষ্ট হয়ে গেছে।’

কতটুকু জমি এবং কত টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছিল, এ বিষয়ে জানতে ৪ মার্চ শ্রীপুরের ইউএনও কার্যালয়ে গেলে সেখান থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্যও দেননি ইউএনও মোছা. মমতাজ মহল।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ বলেন, পার্কটি যেভাবে গড়ে ওঠার দরকার, সেভাবে হয়নি। তাঁরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখানটায় একটা প্রকল্প করার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।