সিলেটে তিন নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে, জলবদ্ধ নগর

ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আবারও বেড়েছে সুরমা নদীর পানি। সিলেট নগরের মাছিমপুর এলাকা থেকে তোলাছবি: প্রথম আলো

সিলেটে উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টির পানিতে তিনটি নদীর তিন পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। জেলার খাল ও নালার পানি বেড়ে জলাবদ্ধ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। নগরের ভেতরে অনেক বাসাবাড়িতে পানি জমেছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, আজ রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সিলেটের সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্ট, কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্ট এবং সারি নদের সারিঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

আজ সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টায় সিলেটে ৬০ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানান জেলার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন। তিনি বলেন, এর মধ্যে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে তিন ঘণ্টায় ৫২ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ১৮ জুন পর্যন্ত জেলায় মাঝারি থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।

অন্যদিকে গত দুই দিনের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার খাল ও নালার পানি বেড়ে অনেক বাসাবাড়িতে পানি উঠেছে। ঈদের এক দিন আগে এমন পরিস্থিতিতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নগরসহ অন্য এলাকার বাসিন্দারা।

এদিকে সিলেট জেলা প্রশাসন ও সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি আছে। জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি উপজেলায় উদ্ধারকাজের জন্য নৌকাও প্রস্তুত আছে। ঈদের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ খাবারের আয়োজনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা পরিস্থিতিতে ত্রাণসহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জেলার পাউবো সূত্রে আরও জানা গেছে, সিলেটের সব কটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যে আজ দুপুর ১২টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা থেকে ৯৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীটির সিলেট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর গোয়াইনঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার নিচে অবস্থান করছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢল নেমে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতে বৃষ্টিপাত কমে এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।