রাজশাহী নগর
টিসিবির ডিলারেরা বিক্রি করছেন পচা পেঁয়াজ
কার্ডধারী গ্রাহক পেঁয়াজ নিতে চাচ্ছেন না। কিন্তু বাধ্যতামূলক প্যাকেজ হওয়ায় তাঁরা এ নষ্ট পেঁয়াজ নিচ্ছেন।
রাজশাহীতে টিসিবির পণ্যের ৪৪৫ টাকার প্যাকেজে রয়েছে দুই কেজি পেঁয়াজ। টিসিবির পণ্য কিনতে হলে পেঁয়াজ নেওয়াটা বাধ্যতামূলক। রাজশাহীর নগরের হড়গ্রাম এলাকার রাজমিস্ত্রি আরমান আলী পেঁয়াজগুলো প্রতিবেদককে দেখিয়ে বলেন, ‘গরিবকে পচা পেঁয়াজ গেলাচ্ছে টিসিবি।’
রাজশাহী নগরে টিসিবির (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) ডিলারেরা পচা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুবিধাভোগীরা। তাঁরা বলেন, কার্ডধারী কোনো গ্রাহক পেঁয়াজ নিতে চাচ্ছেন না। কিন্তু প্যাকেজের সব পণ্য বাধ্যতামূলক করার কারণে তাঁরা এ পেঁয়াজ নিচ্ছেন।
টিসিবি সূত্র জানায়, পারিবারিক কার্ডের মাধ্যমে গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহী নগরের ১০টি ওয়ার্ডে এই পণ্য সরবরাহ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি ওয়ার্ডগুলোতেও সরবরাহ করা হবে। একটি পরিবারের জন্য তৈরি করা প্যাকেজে দুই কেজি ডাল ১৩০ টাকায়, দুই কেজি পেঁয়াজ ৪০ টাকায়, এক কেজি চিনি ৫৫ টাকায় ও দুই লিটার সয়াবিনের তেল ২২০ টাকায় দেওয়া হচ্ছে।
নগরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, রোদের মধ্যে অনেক মানুষ দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বিক্রয়কেন্দ্রের কাছাকাছি যেতেই পচা পেঁয়াজের উৎকট গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। নগরের চারখুটা এলাকার গৃহিণী মমতাজ বেগম (৪৫)। তিনি বলছেন, ‘ব্যাগার পেঁয়াজগুলান ধরায়ে দিল। এই পেঁয়াজের গন্ধে এখনই থাকা যাচ্ছে না। এই পেঁয়াজ দিয়ে কী কইরব?’
এসব কথা শুনে ট্রাকের যে কর্মচারীরা পেঁয়াজ প্যাকেট করছেন তাঁরা বলেন, ‘বাইরে পচে গেলেও ভেতরে ভালো আছে পেঁয়াজ। নিয়ে যান।’
কেন্দ্রের পরিবেশক গোলাম রসুল একটি চেয়ারের ওপরে বসে সবার কার্ড মিলিয়ে দেখছেন। তিনি বলেন, তাঁদের তো কিছু করার নেই। টিসিবি গতকাল সোমবার রাতে তাঁদের মাল দিয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্রি করছেন। এক দিনে তো এই পেঁয়াজ নষ্ট হয়নি।
নগরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিক্রয়কেন্দ্রে গিয়েও একই চিত্র দেখা যায়। যে কর্মচারী পেঁয়াজ প্যাকেট করছেন তাঁর হাতে–পায়ে যাতে পচা পেঁয়াজের কষ না লাগে, সে জন্য তিনি হাতে-পায়ে পলিথিন জড়িয়ে রেখেছেন।
এ ব্যাপারে টিসিবির রাজশাহী অঞ্চলের অফিসপ্রধান শাহিদুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজগুলো আমদানি করার সময় দুই দেশেই বৃষ্টি ছিল। তাই ত্রিপল দিয়ে পাঁচ-সাত দিন ঢেকে রাখতে হয়েছিল। এতে পেঁয়াজগুলো ঘেমে গেছে। মোট পেঁয়াজের ভেতর থেকে নষ্ট আট টন তাঁরা ফেলে দিয়েছেন। এগুলো গ্রাহকদের দেওয়া হয়নি।