মাদারীপুরে জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্বে ছোট ভাইকে ঘাড় মটকে হত্যার অভিযোগ

নিহত লাভলু বয়াতি
ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে নিজের ছোট ভাইকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের শংকরদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম লাভলু বয়াতি (৪৫)। তিনি বদরপাশা ইউনিয়নের শংকরদী গ্রামের মৃত ইসরাফিল বয়াতির ছেলে এবং পেশায় একজন অটোরিকশাচালক। অভিযুক্ত বড় ভাইয়ের নাম বাবুল বয়াতি (৫৫)।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পৈতৃক জমিজমা নিয়ে আপন দুই ভাই বাবুল বয়াতি ও লাভলু বয়াতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল। গতকাল সন্ধ্যার দিকে ছোট ভাই লাভলু বয়াতি বাড়িতে এলে বড় ভাই বাবুল বয়াতির সঙ্গে তাঁর কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও মারামারি শুরু হয়। এ সময় ছোট ভাই লাভলু মাটিতে পড়ে গেলে তাঁকে চেপে ধরেন বাবুল। পরে লাভলুকে মুমূর্ষু অবস্থায় স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত ব্যক্তির বোন ফরিদা বেগম বলেন, ‘বাড়ির জায়গা নিয়ে আমার বড় ভাই ও ছোট ভাইয়ের মধ্যে প্রথমে কথা-কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়। পরে দুজন মারামারি করেন। এ সময় ছোট ভাই মাটিতে পড়ে গেলে ওরে চেপে ধরলে ও মারা যায়।’

মাদারীপুরের রাজৈরে বড় ভাইয়ের হাতে ছোট ভাই হত্যার ঘটনায় স্বজনদের আহাজারি। গতকাল রোববার রাতে উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের শংকরদী এলাকায়
ছবি: সংগৃহীত

নিহত লাভলু বয়াতির স্ত্রী নাছিমা বেগম বলেন, ‘আমার ভাশুর বাবুল বয়াতি আমার স্বামীকে মেরে ফেলেছেন। সামান্য জমি নিয়ে তিনি এটা কেন করলেন? আমি এই হত্যার বিচার চাই।’

ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত বড় ভাই বাবুল বয়াতি। তবে তাঁর স্ত্রী পারুল বেগমকে রোববার রাতেই অভিযান চালিয়ে আটক করে পুলিশ।

রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, আপন দুই ভাইয়ের মধ্যে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড। দুই ভাই মারামারি করেন। একপর্যায়ে বড় ভাই ছোট ভাইকে চেপে ধরে কিল–ঘুষি মারতে থাকেন। ছোট ভাই মাটিতে পড়ে গেলে তাঁর ঘাড় মটকে দেন বড় ভাই। এতেই ছোট ভাইয়ের মৃত্যু হয়। অনেকটা কুস্তিগিরদের মতো অবস্থা। অভিযুক্ত বড় ভাই বাবুল বয়াতি ঘটনার পর থেকে পলাতক। তাঁকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত বাবুলের স্ত্রী পারুল বেগমকে আটক করেছে। নিহত ব্যক্তির স্ত্রীকে মামলা করতে বলা হয়েছে।