২০১ গম্বুজ মসজিদে নামাজ পড়তে ১৮০ কিমি সাইকেল চালিয়ে এলেন গোপালপুরে

২০১ গম্বুজ মসজিদে নামাজ পড়তে ফরিদপুরের মধুখালী থেকে সাইকেলে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন রাসেল লাল বিশ্বাস
ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ২০১ গম্বুজ মসজিদে জুমার নামাজ পড়ার ইচ্ছা ছিল রাসেল লাল বিশ্বাসের। সেই ইচ্ছা পূরণে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার পথ সাইকেল চালিয়ে ফরিদপুরের মধুখালী থেকে গোপালপুরে পৌঁছেছেন তিনি। আজ শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের পর আবার একইভাবে বাড়ি ফিরবেন ৫৮ বছর বয়সী রাসেল।

রাসেল বিশ্বাসের বাড়ি ফরিদপুরের মধুখালী পৌর এলাকার পশ্চিম গারাখোলা এলাকায়। তিনি ওই এলাকার মৃত আবদুল ছাত্তার বিশ্বাসের ছেলে। পেশায় তিনি বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি।

রাসেল বিশ্বাস জানান, পত্রপত্রিকায় গোপালপুরের পাথালিয়া ২০১ গম্বুজের কথা তিনি জানতে পারেন। তিনি শুনেছেন, এই মসজিদে প্রতি শুক্রবার দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ জুমার নামাজ পড়তে আসেন। তাঁরও শখ হয় এই মসজিদে নামাজ পড়ার। তিনি জানান, বাসে এলে আশপাশের কোনো কিছু দেখা হবে না। কিন্তু সাইকেল নিয়ে এলে ফরিদপুর থেকে গোপালপুর পর্যন্ত নানা এলাকা দেখা হবে। তাই গত বুধবার সকাল ছয়টার দিকে মধুখালী নিজ বাড়ি থেকে সাধারণ একটি সাইকেল নিয়ে গোপালপুরের উদ্দেশে রওনা হন।

যাত্রাপথের বর্ণনা দিয়ে রাসেল বিশ্বাস বলেন, যাত্রা শুরুর পর কোনো বিরতি না দিয়ে ৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছান দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে। ফেরিতে নদী পার হয়ে আরিচা প্রান্তে আসেন। তারপর আবার সাইকেল চালানো শুরু করেন।

মানিকগঞ্জের শিবালয়, ঘিওর হয়ে দৌলতপুর উপজেলা সদরে আসেন বুধবার দুপুরে। সেখানে দুপুরের খাবার খেয়ে আবার যাত্রা শুরু করেন। টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা পার হয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার অলোয়া এলাকায় একটি মসজিদে রাত্রিযাপনের উদ্যোগ নেন। কিন্তু ওই এলাকার মতিয়ার রহমান নামের এক ব্যক্তি তাঁকে তাঁর বাড়িতে রাত্রিযাপনের সুযোগ দেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে সাতটায় আবার যাত্রা শুরু করেন গোপালপুরের উদ্দেশে। দুপুর ১২টায় তিনি গোপালপুরের পাথালিয়া গ্রামে ২০১ গম্বুজ মসজিদে পৌঁছান।

মুঠোফোনে রাসেল বিশ্বাস জানান, গোপালপুরে পৌঁছে তিনি ওই এলাকা ঘুরে দেখছেন। শুক্রবার জুমা নামাজের পর আবার বাড়ির উদ্দেশে সাইকেল নিয়ে রওনা হবেন। রাসেল বিশ্বাস জানান, এর আগে কখনো এত দীর্ঘ পথ সাইকেল চালাননি। তবে এলাকায় নিয়মিত সাইকেল নিয়ে চলাচল করেন। তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। তাঁরাও সাইকেল নিয়ে আসতে উৎসাহিত করেছেন।

রাসেল বিশ্বাস বলেন, ‘দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দিতে নতুন নতুন অনেক জায়গা দেখেছি। আমার খুব ভালো লেগেছে। তাই পথে কোনো ক্লান্তিবোধ হয়নি।’

টাঙ্গাইল জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক ইফতেখারুল অনুপম বলেন, সাইকেল চালানো একটি ভালো অভ্যাস। নিয়মিত সাইকেল চালালে শরীর, স্বাস্থ্য ও মন ভালো থাকে। রাসেল বিশ্বাসের এই সাইকেল চালানো দেখে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হবেন।