নেত্রকোনায় একমাত্র নারী স্বতন্ত্র প্রার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস

জান্নাতুল ফেরদৌস
ছবি: প্রথম আলো

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোনার ৫টি আসনে অংশ নিতে ৩৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ে ১৩ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে একমাত্র নারী স্বতন্ত্র প্রার্থী নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) আসনের জান্নাতুল ফেরদৌস আরা। এ ছাড়া নেত্রকোনা-২ (সদর-আটপাড়া) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে লড়বেন আসমা সুলতানা।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনা-১ আসন থেকে ছয়জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। যাচাই-বাছাইয়ে তাঁদের মধ্যে দুজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে একমাত্র নারী প্রার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস আরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জান্নাতুল ফেরদৌস আরা এই আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন তালুকদারের একমাত্র মেয়ে। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য, দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহসম্পাদক। তিনি দশম ও একাদশ নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে গত ৬ নভেম্বর পদত্যাগ করেন।

আসনটিতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়ে যে ২২ জন মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন, তাঁদের মধ্যে তিনি ছিলেন একমাত্র নারী মনোনয়নপ্রত্যাশী। কিন্তু তাঁকে মনোনয়ন না দিয়ে ওই আসনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয় মোশতাক আহমেদ রুহীকে। মোশতাক নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথম দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হন। পরে দশম ও একাদশ নির্বাচনে মনোনয়নবঞ্চিত হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আনারস ও আপেল প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।

স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলেন, এবার এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোশতাক আহমেদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী জান্নাতুল ফেরদৌস। কারণ, জান্নাতুলের প্রয়াত বাবার ইমেজসহ তাঁর নিজস্ব একটি ভোটব্যাংক আছে।

জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় কর্মী-সমর্থকেরা বলছেন নির্বাচন করতে। প্রধানমন্ত্রীও বলে দিয়েছেন, স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করলে দলের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নেই। তাই অংশ নিয়েছি। আমি আমার বাবার রেখে যাওয়া অসম্পূর্ণ কাজগুলো শেষ করতে চাই।’

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নেত্রকোনা শাখার সাধারণ সম্পাদক তাহেজা বেগম বলেন, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের বিষয়টি সব সময়ই অবহেলিত। এবারের নির্বাচনে নেত্রকোনায় দুজন নারী সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এটা অবশ্যই নারীদের জন্য ইতিবাচক দিক।