শ্বশুর খুন হয়েছিলেন চোখের সামনে, এবার সাক্ষী পুত্রবধূকে তুলে নিয়ে গেল দুর্বৃত্তরা
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় পুলিশ পরিচয়ে ঘরে ঢুকে হত্যা মামলার সাক্ষীকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপহৃত নারীর নাম আয়েশা বেগম (৪০)। গত বৃহস্পতিবার রাত একটার দিকে উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের গুরুইন্যাকাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বসতঘরে লুটপাট চালিয়ে আরও চারজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়। আজ শনিবার এ ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পার হলেও এখনো আয়েশা বেগমের কোনো সন্ধান পায়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুর্বৃত্তরা আয়েশাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর জা নুরুজা বেগম (৪০) ও মেয়ে ফারজানা ইয়াছমিন (১৯), মরিয়ম বেগম (৩৫) ও মোছাম্মৎ ছিদ্দিকাকে (১৮) কুপিয়ে আহত করে। তাঁরা বর্তমানে চকরিয়া উপজেলার সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হামলা, লুটপাট ও অপহরণের ঘটনায় চকরিয়া থানায় ৯ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আহত নুরুজা বেগম।
আয়েশার পরিবারের লোকজন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে পৌনে একটার দিকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে দরজা খুলতে বলেন কিছু ব্যক্তি। তাঁরা দরজা না খোলায় বাইরে থেকে দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে ১০-১৫ জন অস্ত্রধারী। এরপর তারা পরিবারের সদস্যদের মারধর শুরু করে। ঘরে থাকা পাঁচ নারীকে কুপিয়ে জখম করে নগদ ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা ও ১ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে তারা। পরে আহত অবস্থায় আয়েশা বেগমকে তুলে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।
উল্লেখ্য, গত ২৮ এপ্রিল গুরুইন্যাকাটায় বসতবাড়ির ওপর দিয়ে পানি চলাচলের পাইপ নিতে চাওয়ায় বাধা দেন আবদুল করিম ও তাঁর ছেলেরা। এ সময় আবদুল করিমকে (৭০) পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় হামলাকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন ছেলে আলী আহমদ। এ মামলার অন্যতম সাক্ষী ছিলেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আবদুল করিমের পুত্রবধূ আয়েশা বেগম (৪০)। তিনি আবদুল মালেকের স্ত্রী।
এ বিষয়ে আহত নুরুজা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী আলী আহমদ হত্যা মামলাটির বাদী হওয়ায় সন্ত্রাসীদের হুমকি পেয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের আরেক ভাই অন্য একটি মামলায় জেলহাজতে। বর্তমানে বাড়িতে কোনো পুরুষ নেই। এ সুযোগে হামলা, লুটপাট চালিয়ে আমার জা আয়েশাকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। দেড় দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত তাঁর কোনো খোঁজ দিতে পারেনি পুলিশ।’
গতকাল শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) এম এম রকীব উর রাজা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনজুর কাদের ভূঁইয়া। ওসি মো. মনজুর কাদের ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, অপহৃত গৃহবধূকে উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে পুলিশ। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।