নোয়াখালীর সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪৪ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে তমরুদ্দি বাজারের শ্রমিক নুরুন নবী বাদী হয়ে ওই মামলাটি করেন। মামলায় কারাগারে থাকা সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মামলার এজাহারে বাদী নুরুন নবী অভিযোগ করেন, গত ৫ আগস্ট বিকেল আনুমানিক চারটার দিকে তিনি তমরুদ্দি বাজারের ভেতর হেঁটে যাচ্ছিলেন। এমন সময় হাতিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর লোকজন তাঁর ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা তাঁকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। নুরুন নবী জানান, হামলাকারীরা একই দিন তমরুদ্দি বাজারের কয়েকটি দোকানে ও আশপাশের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে। ঘটনার পর লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
হাতিয়া থানা সূত্রে জানা গেছে, নুরুন নবীর করা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া এজাহারে আরও ১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং ২০ থেকে ৩০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি দেখানো হয়েছে। আসামিরা সবাই সাবেক সংসদ সদস্যের অনুসারী এবং স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী।
মামলার বিষয়ে মোহাম্মদ আলীর ছোট ভাই, হাতিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুব মোর্শেদ প্রথম আলোকে বলেন, হাতিয়ার শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করতে এবং তাঁর ভাইকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে এসব সাজানো মামলা করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে তমরুদ্দিতে সেদিন এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীসহ তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিসান আহমেদ। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, বাদীর লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে মোহাম্মদ আলী ও তাঁর পরিবারের চার সদস্যসহ ১৪৩ জন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করা হয় হাতিয়া থানায়। ওই মামলা দায়েরের আগে গত রোববার দিবাগত রাতে হাতিয়া পৌরসভার চর কৈলাস গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে সাবেক সংসদ সদস্য দম্পতি মোহাম্মদ আলী, তাঁর স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও ছেলে আশিক আলীকে নৌবাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে তাঁদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।