পঞ্চগড়ের সড়কে জারুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রকৃতিপ্রেমীদের ভিড়
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা শহরের উপকণ্ঠে রাঙ্গাপানি সেতুসংলগ্ন তালতলী-মরাতল্লী এলাকার একটি সড়ক এখন প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে হয়ে উঠেছে আকর্ষণের জায়গা। সড়কের দুই পাশে সবুজ বাগানে ফুটেছে সারি সারি জারুল ফুল। রঙিন হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সেখানে ভিড় করছেন নানা বয়সী মানুষ। কেউ ফুলের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউবা ভিডিও কলে প্রিয়জনকে দেখাচ্ছেন দৃশ্যটি।
দেবীগঞ্জ-টেপ্রীগঞ্জ সড়কের তালতলী-মরাতল্লী এলাকার এই বাগানকে স্থানীয়ভাবে ‘খয়েরবাগান’ বলা হয়। বন বিভাগের আওতায় থাকা প্রায় ২৫ একর জায়গাজুড়ে একসময় খয়েরগাছে ভরা ছিল এলাকা। এখন সেখানে জারুলসহ নানা গাছের সমারোহ।
সম্প্রতি স্থানীয় কিছু কনটেন্ট নির্মাতা এই এলাকার জারুল ফুলে ঘেরা সড়ক এবং প্রকৃতির দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এর পর থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সী মানুষ আসছেন এই ফুল দেখতে ও ছবি তুলতে।
গত সোমবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কজুড়ে অনেক মানুষ। কেউ মোটরসাইকেল থামিয়ে, কেউবা হেঁটে উপভোগ করছিলেন ফুলের সৌন্দর্য। আকাশে হালকা মেঘ ছিল। জ্যৈষ্ঠের পুবালি বাতাসে এক মনোরম পরিবেশ তৈরি হয় সেখানে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাগানজুড়ে থাকা গাছগুলোর বড় অংশ জারুল। প্রায় ৩০০ মিটার এলাকাজুড়ে ফুল ফোটায় সড়কটি এখন রঙিন এক টানেল হয়ে উঠেছে।
দুপুরের পর ফুল দেখতে এসেছিলেন আয়শা আক্তার ও নাসরিন সুলতানা নামের দুই নারী। ছোটবেলার বান্ধবী হলেও সংসারজীবনের ব্যস্ততায় তাঁদের দেখা হয় না তেমন। সড়কটি ঘুরে দেখতে একসঙ্গে এসেছেন তাঁরা। নাসরিন বলেন, ‘আমি মূলত ডাক্তার দেখাতে বের হয়েছিলাম। কয়েক দিন ধরে এই ফুলগুলো শুধু ফেসবুকেই দেখেছি। এখানে এসে মনটা সত্যি ভালো হয়ে গেল। দুই বান্ধবী মিলে ছবিও তুললাম।’
স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘বাচ্চাদের নিয়ে ফুল দেখতে এলাম। কয়েক দিন ধরে তো এটা ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে। দৃশ্যটা অনেক সুন্দর। মন ভালো করার মতো জায়গা।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) পঞ্চগড় জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষ সব সময় কোনো না কোনো বিনোদনের জায়গা খোঁজে। সড়কের পাশে জারুলের এমন সৌন্দর্য কিছু সময়ের জন্য হলেও মানুষকে প্রশান্তি দিচ্ছে। সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় আমাদের আরও বেশি গাছ লাগানো উচিত।’