হবিগঞ্জে সাবেক সংসদ সদস্য আবু জাহিরের বিরুদ্ধে আরও একটি হত্যা মামলা

মামলাপ্রতীকী ছবি

হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মোস্তাক আহমেদ (২৫) হত্যার ঘটনায় হবিগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু জাহিরসহ ১১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এতে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে।

আজ বুধবার দুপুরে এস এম মামুন বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলাটি করেন। মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূরুল আলম।

নিহত মোস্তাক আহমেদ সিলেটের জালালাবাদ থানার বউরিপুর এলাকার আবদুল কাদিরের ছেলে। তিনি হবিগঞ্জে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্পে শ্রমিকের কাজ করতেন।মামলার বাদী এস এম মামুন হবিগঞ্জ পৌর যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক। তিনি জানিয়েছেন, নিহতের পরিবারের সম্মতি নিয়ে তিনি এ মামলায় বাদী হয়েছেন।

এর আগে ১৫ আগস্ট হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত রিপন শীল (২৭) হত্যার ঘটনায় আবু জাহিরসহ ৫৯ জনের নামে মামলা করা হয়।

আজকের মামলায় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার অব্যাহতি পাওয়া মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান (সেলিম), সদর উপজেলা পরিষদের সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও হবিগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, লাখাই উপজেলা পরিষদের সদ্য অব্যাহতি পাওয়া চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুশফিউল আলম (আজাদ), শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের অব্যাহতি পাওয়া চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রশিদ তালুকদার ইকবাল, বানিয়াচং উপজেলা পরিষদের অব্যাহতি পাওয়া চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, বানিয়াচং উপজেলার মন্দুরী ইউপির চেয়ারম্যান শেখ শামছুল হক, জেলা যুবলীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ রাজ ও শাহ নেওয়াজ।

শাহ নেওয়াজ যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য আবু জাহিরের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ঘটনার দিন (২ আগস্ট) তিনি আবু জাহিরের পাশে থেকে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালান। সেই দৃশ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা জুমার নামাজের পর হবিগঞ্জে শহরের কোর্ট মসজিদের সামনে অবস্থান নেন। পরে তাঁরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। শহরের টাউন হল এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সশস্ত্র অবস্থায় ছিলেন। শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় সাবেক সংসদ সদস্য আবু জাহিরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা হামলা চালান। এ সময় মোস্তাক আহমেদ গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।