আমেরিকায় কয়জন মানুষ যায়, তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কী করবে: কৃষিমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উন্মোচন এবং বন ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন বিষয়ক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। শনিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের মধুপুর জাতীয় উদ্যানের দোখলা রেঞ্জে
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘১৭ কোটি মানুষের দেশ। আমেরিকায় কয়জন মানুষ যায়? তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কী করবে? গুলশান-বনানীর বড়লোকের ছেলেমেয়েরা আমেরিকায় যায়। তারা না যেতে পারলে বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হবে না। দু-একজন মন্ত্রী না যেতে পারলেও দেশের কোনো ক্ষতি হবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জেলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। ভিসা নিয়ে আমরা আমেরিকায় যেতে পারব না। এটি কোনো বিষয় না।’
আজ শনিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের মধুপুর জাতীয় উদ্যানের দোখলা রেঞ্জে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল উন্মোচন অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এসব কথা বলেন। টাঙ্গাইল বন বিভাগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ম্যুরাল উন্মোচনের পাশাপাশি বন উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা–সম্পর্কিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমেরিকা অর্থনৈতিক, সামরিকভাবে শক্তিশালী বড় দেশ। তাদের বিভিন্ন হুমকি, নিষেধাজ্ঞা প্রভৃতি শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর অন্য অনেক দেশকেও মোকাবিলা করতে হয়। অর্থনৈতিকভাবে যদি আমেরিকা স্যাংশন দেয়, আমরাও দেখব কীভাবে তা মোকাবিলা করা যায়। আন্তর্জাতিক বিশ্বে অনেক দেশ আমাদের সঙ্গে আছে। কাজেই স্যাংশন দিয়ে আমাদের নিবৃত্ত করা যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বানচাল করার জন্য কোনো বিদেশি শক্তি বা দেশ যদি চেষ্টা করে, তা মোকাবিলা করার মতো অর্থনৈতিক সক্ষমতাসহ সব শক্তি বাংলাদেশের রয়েছে। দেশের জনগণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। জনগণকে নিয়েই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সব ষড়যন্ত্র আমরা মোকাবিলা করব।’

আগামী নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু ও সুন্দর হবে এবং তা সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে মন্তব্য করেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, নির্বাচন বানচাল করার জন্য বিএনপি বিভিন্ন রকম আন্দোলন কর্মসূচি করছে। নানা রকম হুমকি দিচ্ছে। নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের মতো আবারও সহিংসতা, আগুন–সন্ত্রাস ও তাণ্ডব সৃষ্টি করতে চাইছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোরভাবে তাদের এই অপচেষ্টাকে মোকাবিলা করবে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে মোকাবিলা করার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
মধুপুরের বন দেশের জাতীয় সম্পদ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি টাঙ্গাইলের জন্য ঐতিহ্য ও গৌরবের। ঘনবসতিপূর্ণ দেশে বন রক্ষা করা খুবই কঠিন। নানা কারণে বনের অনেকটা ধ্বংস হয়েছে। মধুপুরের বন রক্ষার জন্য আমরা নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। যারা বন কাটত, তাদের আমরা বন রক্ষার জন্য ভলান্টিয়ার করেছি। ২৮ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। ঢাকা কেন্দ্রীয় অঞ্চলের বন সংরক্ষক হোসাইন মো. নিশাদের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলাম, টেকসই বন ও জীবিকা প্রকল্পের পরিচালক গোবিন্দ রায়, পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ইয়াকুব আলী, পৌরসভার মেয়র সিদ্দিক হোসেন খান প্রমুখ।