সড়ক দুর্ঘটনায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী আহত হওয়ার প্রতিবাদে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়ক পার হতে গিয়ে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আহত হয়েছেন। এ খবর শুনে দেড় ঘণ্টা কুয়াকাটা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। এতে মহাসড়কের দুপাশে অসংখ্য যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন আটকা পড়ে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা বিকেল চারটার দিকে অবরোধ তুলে নেন।

কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীরা জানান, রোববার বেলা দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়ক পার হতে গিয়ে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় দুর্ঘটনার শিকার হন মৃত্তিকা ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী কানিজ ফাতিমা। তাঁকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থী বাঁ পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন।

এ খবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে বেলা আড়াইটার দিকে নিরাপদ সড়ক, অপরাধীর বিচার এবং ফুটওভার ব্রিজ (পদচারী সেতু) নির্মাণ ও স্পিড ব্রেকারের (গতি নিরোধক) দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। কিছুক্ষণ পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে আটকা পড়ে অসংখ্য যানবাহন।

কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীরা তাঁদের দাবিসংবলিত পোস্টার প্রদর্শন ও বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. ছাদেকুল আরেফিন ঘটনাস্থলে আসেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি আহত শিক্ষার্থীর যথাযথ চিকিৎসা এবং শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নে আশ্বাস দেন। তাঁর আশ্বাস পেয়ে বিকেল চারটার দিকে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনে প্রতিনিধিত্বকারী শিক্ষার্থী মুস্তাকিম বিল্লাহ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবি আমাদের বহুদিনের। কিন্তু এ ব্যাপারে কর্ণপাত করছে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ আমাদের এক সহপাঠী সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হওয়ায় আমাদের রাস্তায় নামতে হলো।'

আরেক শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, উপাচার্য বলেছেন, খুব দ্রুত তাঁদের দাবিগুলো পূরণ করা হবে। একই সঙ্গে আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং অভিযুক্ত মোটরসাইকেলচালককে আইনের আওতায় আনা হবে। তাঁর আশ্বাসের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. খোরশেদ আলম বলেন, আহত শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে। তাঁর বাম পায়ে গুরুতর আঘাত লেগেছে।

শিক্ষার্থীদের দাবি প্রসঙ্গে প্রক্টর খোরশেদ আলম আরও বলেন, ‘আমরা এসব দাবি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেব। যেহেতু মহাসড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাভুক্ত। তাই এখানে ফুটওভার ব্রিজ ও জেব্রা ক্রসিং ও স্পিড ব্রেকার নির্মাণের ব্যাপারে শিগগিরই আলোচনা করা হবে।’