জাফলংয়ে ঘুমের মধ্যে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মা-মেয়ের মৃত্যু, দগ্ধ ৪

অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া ঘরবাড়ি দেখতে এসেছেন স্থানীয় লোকজন। আজ সোমবার সকালে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় জাফলং এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় জাফলং এলাকায় ঘুমের মধ্যে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এতে একই পরিবারের অপর চারজন দগ্ধ হয়েছেন। গতকাল রোববার মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া দুজন হলেন জেসমিন আক্তার (৩২) ও তাঁর মেয়ে সুমাই আক্তার (১৩)। তাঁদের বাড়ি উপজেলার জাফলং এলাকার রসুলপুর গ্রামে। দগ্ধ চারজন হলেন জেসমিন আক্তারের স্বামী ইয়াকুব আলী, ইয়াকুবের মা ও ইয়াকুবের দুই ছেলে জুনাইদ (৫) ও জুবাইর (৪)।

দগ্ধ ইয়াকুব আলীর প্রতিবেশী জোলহাস মিয়া বলেন, রাতে ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ চিৎকার শুনে উঠে ইয়াকুবের ঘরে আগুন দেখতে পান। এরপর স্থানীয় লোকজন নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালান।

স্থানীয় বাসিন্দা, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ইয়াকুব আলী নিজ ঘরের একটি কক্ষে মুদিদোকান চালাতেন। সেখানে গ্যাসের সিলিন্ডারও বিক্রি করতেন। দোকানসংলগ্ন ছিল তাঁদের থাকার ঘর। সেখানে তাঁর মা, স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। গতকাল রাতে দোকান বন্ধ করে পরিবারের সদস্যরা ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ ঘরে আগুন ধরে যায়। এ সময় দোকানে রাখা গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন ধরে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে মা-মেয়ের দগ্ধ লাশ উদ্ধার করেন। সেই সঙ্গে দগ্ধ চারজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।

জৈন্তাপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা মো. বায়েজিদ বোস্তামী বলেন, গতকাল দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে তাঁরা আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলের পথে রওনা দেন। পরে সেখান থেকে দুজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। দগ্ধ চারজনকে উদ্ধার করে রাতেই স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিক্রির জন্য মজুত করে রাখা গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান বলেন, মারা যাওয়া দুজনের দাফন-কাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে এবং দগ্ধ প্রতি জনের জন্য ১০ হাজার টাকা করে সিলেট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে।

দুজনের লাশ আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম।