রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের টেন্টে ছাত্রদল কর্মীর হালিমের দোকান
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে ছাত্রলীগের দলীয় টেন্টের সামনে হালিমের দোকান দিয়েছেন শাখা ছাত্রদলের এক কর্মী। ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের ক্যাম্পাস ছাড়ার পর ১৫ থেকে ২০ দিন আগে ‘ইরানি হালিম বাজার’ নামের ওই দোকানটি বসানো হয়।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকতে ক্যাম্পাসে শাখা ছাত্রলীগের একক আধিপত্য ছিল। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে গত ১৬ জুলাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাস ছাড়েন। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ক্যাম্পাসে ফিরে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করে ছাত্রদল। এমন পরিস্থিতিতে ছাত্রলীগের দলীয় টেন্টে ছাত্রদল কর্মীর হালিমের দোকান বসানো নিয়ে ক্যাম্পাসে আলোচনা তৈরি হয়েছে।
হালিমের দোকানে গিয়ে দোকানির সঙ্গে কথা বললে তিনি নিজেকে কর্মচারী বলে পরিচয় দেন। ফয়জুল ইসলাম (অমি) নামের আরেকজনকে দেখিয়ে জানান, তিনি দোকানের মালিক। ফয়জুল নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দেন। ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে, ফয়জুল ছাত্রদলের একজন কর্মী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাকিলুর রহমানের (সোহাগ) অনুসারী।
জানতে চাইলে ছাত্রদল কর্মী ফয়জুল ইসলাম বলেন, প্রক্টর দপ্তরের সেকশন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে দোকানটি বসানো হয়েছে। পরে প্রক্টর জায়গাটি গ্রন্থাগারের অংশ জানিয়ে দোকান সরিয়ে নিতে বলেছেন। পূজার ছুটির মধ্যে দোকানটি সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এ বিষয়ে ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাকিলুর রহমান বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি দোকানটি রাস্তার পাশে। এটা কোনো দলীয় টেন্ট না। তবে কোনো রাজনৈতিক দলের টেন্টে হয়ে থাকলে দোকানটি সরিয়ে নেওয়া উচিত।’
ছাত্রলীগের টেন্টে ছাত্রদল কর্মীর দোকান বসানোর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের টেন্টের সামনে ছাত্রদলের একজন হালিমের দোকান বসিয়েছে। একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে নির্ধারিত স্থানে উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যবসা করতে পারেন। কিন্তু কোনো সংগঠনের টেন্টে এভাবে দোকান খুলে বসা কখনোই ভালো কাজ হতে পারে না। ছাত্রলীগকে হেয় করতে মূলত ওখানে দোকান বসিয়েছে। তিনি এর তীব্র নিন্দা জানান।
এদিকে দোকানটি প্রশাসনের অনুমতি না নিয়েই বসানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। গ্রন্থাগারের পাশে হওয়ায় দোকানটি সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
প্রক্টর দপ্তরের সেকশন কর্মকর্তা আশিকুর রহমান দোকান বসানোর অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা বলে জানান। তিনি বলেন, তাঁরা অনুমতি নেওয়ার জন্য প্রক্টর অফিসে এসেছিলেন। তাঁরা বলেছেন, এটি এস্টেট দপ্তরের বিষয়। প্রক্টর অফিস এ বিষয়ে অনুমতি দিতে পারে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহাবুবর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওদের সঙ্গে আমার কয়েক দিন আগে কথা হয়েছে। শিগগিরই সেখান থেকে দোকান সরিয়ে নেবে বলে তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’