ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে গজারিগাছের ডাল আর বাঁশের লাঠি তৈরি করতে বললেন আওয়ামী লীগ নেতা

আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিতদের এক মঞ্চে নিয়ে নির্বাচনী সমাবেশ করেছেন টাঙ্গাইল-৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর এনায়েত হোসেন (মাথায় টুপি পরিহিতি)। সোমবার বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে গজারিগাছের ডাল আর বাঁশের লাঠি তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ। আজ সোমবার বিকেলে তাঁর বড় ভাই ও টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর এনায়েত হোসেন ওরফে মন্টুর নির্বাচনী সমাবেশে যোগ দিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।

উপজেলার শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে মীর শরীফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা যখন লাঞ্ছিত-বঞ্চিত, তখন মির্জাপুরে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মীর এনায়েত হোসেনকে প্রার্থী করেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন করার সুযোগ দিয়েছেন। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আপনাদের প্রতিটি ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে হবে। গজারিগাছের ডাল আর বাঁশের লাঠি তৈরি করে প্রতিটি কেন্দ্রে রেজাল্ট না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের পাহারা দিয়ে রেজাল্ট বুঝে নিতে হবে।’

আরও পড়ুন

এ সময় মীর শরীফ এ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী খান আহমেদ শুভকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আমরা মির্জাপুরের মানুষ, মির্জাপুরের মানুষকে ভোট দিতে চাই। বহিরাগতদের মির্জাপুরে আশ্রয়–প্রশ্রয় দেব না।’

খান আহমেদ শুভর বাড়ি মির্জাপুর উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের কহেলা গ্রামে। তবে তিনি পরিবারের সঙ্গে নিয়ে টাঙ্গাইলে থাকেন। তাঁর বাবা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান।

স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর এনায়েত হোসেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমার ছোট ভাই শরীফ বলেছে, গজারিগাছ আর ভরের (নিচু এলাকা) বাঁশ দুইডা বানিয়ে রাখন লাগব। ওরা কোনো কিছু করবার গেলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

আরও পড়ুন

মীর এনায়েত হোসেন মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে তিনি ওই পদ থেকে সম্প্রতি পদত্যাগ করেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাননি। আজ সকালে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ট্রাক প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন।

মীর শরীফ মাহমুদ এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তিনিসহ দলীয় মনোনয়ন না পাওয়া চারজন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর এনায়েতের আজকের নির্বাচনী সমাবেশে অংশ নেন। অন্য তিনজন হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী তাহরীম হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মেজর (অব.) খন্দকার আবদুল হাফিজ ও রাফিউর রহমান খান ইউসুফজাই। এর মধ্যে রাফিউর দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ার পরও নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দেন। স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগে তাঁর মনোনয়নপত্র টাঙ্গাইলের রিটার্নিং কর্মকর্তা বাতিল করলেও আপিলে তা বৈধ হয়। তবে তিনি গত রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন।

আরও পড়ুন

এ সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি মোবারক হোসেন সিদ্দিকী সভাপতি ছিলেন। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে মির্জাপুর পৌরসভার মেয়র সালমা আক্তার, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মীর্জা শামীমা আক্তার, ভাইস চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আল মামুন, দপ্তর সম্পাদক জহিরুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।