ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যার হুমকি-নির্যাতনের অভিযোগ স্ত্রীর

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতন, যৌতুক গ্রহণ ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তাঁর স্ত্রী। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস কর্নারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি। অভিযোগের কপি উপাচার্য, সহ–উপাচার্য, প্রক্টর, রেজিস্ট্রার দপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে এসব অভিযোগকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ক্যাম্পাসে তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন ও হেয় করার পাঁয়তারা বলে দাবি করেছেন ওই শিক্ষক।

অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম সঞ্জয় কুমার সরকার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি। অন্যদিকে অভিযোগকারী স্ত্রীর নাম জয়া সাহা। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। ২০১৫ সালে পারিবারিকভাবে সঞ্জয় ও জয়ার বিয়ে হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জয়া সাহা অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকে তাঁকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে আসছেন সঞ্জয়। তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালের ২৪ জুন সঞ্জয় আমাকে বাবার বাড়ি নাটোরে পাঠানোর জন্য অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে। যেতে রাজি না হলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে আমাকে ও ছেলেকে নাটোরে রেখে আসে সঞ্জয়। পরে সে (সঞ্জয়) সাফ জানিয়ে দেয়, এই মুহূর্তে ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। টাকা দিলে আমাদের নাটোর থেকে নিয়ে যাবে, না হলে নয়।’

২০২৩ সালের ২৪ জুন সঞ্জয় আমাকে বাবার বাড়ি নাটোরে পাঠানোর জন্য অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে। যেতে রাজি না হলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে আমাকে ও ছেলেকে নাটোরে রেখে আসে সঞ্জয়। পরে সে (সঞ্জয়) সাফ জানিয়ে দেয়, এই মুহূর্তে ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। টাকা দিলে আমাদের নাটোর থেকে নিয়ে যাবে, না হলে নয়।
অভিযোগকারী জয়া সাহা

অভিযুক্ত শিক্ষক সঞ্জয় কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসব অভিযোগের একটিরও সত্যতা নেই। এসব উদ্দেশ্যেপ্রণিত এবং আমাকে ক্যাম্পাসে হেয় করতেই সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। সংসারজীবনে কলহ থাকেই। তাই বলে সংবাদ সম্মেলন করে এবং চার পাতার অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের যত দপ্তর ও সংগঠন আছে, প্রায় সবখানেই দেওয়া হয়েছে। আমার মনে হয় ক্যাম্পাসে শিক্ষক রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কারও মাধ্যমে প্ররোচিত হয়ে এমন ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।’

আমি তাঁকে (জয়া) বাড়ি ফেরাতে আইনি নোটিশও দিয়েছিলাম। তারপরও আমার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দেওয়া হয়। স্ত্রী–সন্তান ফিরে আসুক, সেটা আমি চাচ্ছি।
অভিযুক্ত শিক্ষক সঞ্জয় কুমার সরকার

এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমি তাঁকে (জয়া) বাড়ি ফেরাতে আইনি নোটিশও দিয়েছিলাম। তারপরও আমার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দেওয়া হয়। স্ত্রী–সন্তান ফিরে আসুক, সেটা আমি চাচ্ছি।’

লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘একটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে আজ সেটা দেখা হয়নি। আমরা আগামী কার্যদিবসে অভিযোগ দেখে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করব।’