মাগুরায় অস্ত্রধারী সেই যুবক গ্রেপ্তার

মাগুরায় গত বুধবার স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে এই যুবককে দেখা যায়। তাঁকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
ছবি: সংগৃহীত

মাগুরায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ছুটতে থাকা যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে মাগুরা সদর উপজেলার আলোকদিয়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে মাগুরা সদর থানার পুলিশ জানিয়েছে।

গত বুধবার দুপুরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের সময় ধারণ করা ভিডিও ও স্থিরচিত্রে কলেজ রোডে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে এক যুবককে দেখা যায়। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে ওই যুবককে খুঁজছিল পুলিশ।

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, অস্ত্রধারী সেই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর নাম শাহীন খান। সংঘর্ষের ঘটনায় হওয়া (ছাত্রলীগ নেতার করা) মামলায় ৯০ নম্বর আসামি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

বুধবার স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় তিন শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি বারিউল ইসলাম ওরফে রিয়াদ। মামলায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভীতি সৃষ্টি ও হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে করা ওই মামলায় ১০৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। যার মধ্যে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা ছাড়াও বিএনপির নেতা-কর্মীরা রয়েছেন। ওই মামলায় প্রথম আসামি হিসেবে শাহীন খানকে গ্রেপ্তার করার কথা জানাল পুলিশ।

ছাত্রলীগ নেতা বারিউল ইসলামের করা ওই মামলায় ৯০ নম্বর আসামি শাহীনের (২৫) বাবার নাম লুৎফর রহমান। তাঁর বাড়ি শহরের স্টেডিয়াম পাড়ায়। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে গ্রেপ্তার হওয়া যুবক ছাত্রলীগের সাবেক নেতা বলে দাবি করেছে বিএনপি। শনিবার দুপুরে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহম্মদ ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জেলা বিএনপি বলছে, মামলার ৯০ নম্বর আসামি শাহীন মাগুরা আদর্শ কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তাঁকে সেদিন আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছুড়তে দেখা গেছে এবং তিনি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গেই ছিল।

বিএনপির অভিযোগ, সেদিন শান্তিপূর্ণ মিছিলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান, সেই অপকর্ম ঢাকতে আবার বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামেই মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৯ এপ্রিল মাগুরা আদর্শ কলেজের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি শেখ রেজাউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মীর মেহেদী হাসান। ওই কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নাম ছিল শাহীনের। আদর্শ কলেজের ওই কমিটির সভাপতি নাজমুল হুদা অমি আর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জাহিদ হোসেন।

জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শাহীন নামে ওই যুবক ওই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন কি না এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ওই কমিটি পরবর্তী সময়ে বাতিল করা হয়েছিল। তিনি এখন কী করেন, জানি না।’