ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে তাঁরা পেলেন সোলার সিস্টেমের ভ্রাম্যমাণ দোকান

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ছয়জন ভিক্ষুককে সোলার সিস্টেমের ভ্রাম্যমান দোকান (ভ্যানগাড়ি) ও মালামাল দেওয়া হয়
ছবি: প্রথম আলো

তাঁদের পেশা ছিল ভিক্ষাবৃত্তি। আজ থেকে তাঁরা আর ভিক্ষা করবেন না। বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে তাঁদের প্রত্যেককে একটি করে সোলার সিস্টেম–সংবলিত ভ্রাম্যমাণ দোকান (ভ্যানগাড়ি) ও দোকানের মালামাল দেওয়া হয়েছে। জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তর যৌথ উদ্যোগে তাঁদের এই ভ্রাম্যমাণ দোকান ও দোকানের মালামাল দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার বিকেলে এই ছয়জনকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ভ্রাম্যমাণ দোকান মালামালসহ বুঝিয়ে দেওয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম হাবিবুল হাসান ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস ছালাম আকন্দ সুবিধাভোগীদের হাতে এসব বুঝিয়ে দেন।

এখন থেকে তাঁরা ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে বেচাকেনা করতে পারবেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের নিয়মিত তদারকি করা হবে।

সুবিধাভোগীরা হলেন উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের দিঘলগাড়ী গ্রামের মো. ফেরদুস প্রামাণিক, গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বারইল গ্রামের আবদুল আজিজ, সোনামুখী ইউনিয়নের গণিপুর গ্রামের সুরুজ দেওয়ান, তিলকপুর ইউনিয়নের বামনী গ্রামের মোছা. ফাতেমা, রুকিন্দীপুর ইউনিয়নের উত্তর পশ্চিম রুকিন্দীপুর গ্রামের মীনা বেগম এবং আক্কেলপুর পৌরসভার মকিমপুর মহল্লার মোছা. সাইরন আখতার। তাঁরা সবাই ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত ছিলেন বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

সোলার সিস্টেমের ভ্রাম্যমান দোকান (ভ্যানগাড়ি) পেয়ে খুশি এক সুবিধাভোগী। আজ জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে
ছবি: প্রথম আলো

ইউএনও এস এম হাবিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আক্কেলপুর উপজেলাকে ভিক্ষুক মুক্তকরণে পাইলট প্রকল্প হিসেবে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের পাঁচজন ও আক্কেলপুর পৌরসভার একজন ভিক্ষুককে পুনর্বাসনের আওতায় আনা হয়। উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর এ কার্যক্রমে সহায়তা করছে। ওই ছয় ভিক্ষুককে একটি করে বিশেষ ভ্যানগাড়ি দেওয়া হয়। এসব ভ্যানগাড়ি সোলার সিস্টেম–সংবলিত ভ্রাম্যমাণ দোকান। সেই সঙ্গে দোকানের মালামালও দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে বেচাকেনা করতে পারবেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের নিয়মিত তদারকি করা হবে। মালামালসহ প্রতিটি ভ্যানগাড়ির পেছনে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

মোছা. সাইরন আখতার বলেন, ‘ভিক্ষা পেশা নিন্দিত পেশা। ভ্যানসহ দোকান পেয়ে খুব ভালো লাগছে। এখন ব্যবসা করে খাব। কখনো আর ভিক্ষা করব না।’
সুরুজ দেওয়ান বলেন, ‘সোলার সিস্টেমের ভ্যানগাড়ি ও মালামাল দেওয়া হয়েছে। আজ থেকে আর ভিক্ষা করব না। ভ্যানগাড়ি ও মালামাল পেয়ে খুব ভালো লাগছে।’