বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার মরে ভূত হয়ে গেছে। বিএনপিকে মাথা থেকে এই ভূত নামাতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার মরা লাশ। আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় ঘুমিয়ে আছে তত্ত্বাবধায়ক, এই তত্ত্বাবধায়ক আর কোনো দিন চোখ মেলবে না।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে আজ শুক্রবার বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় জেলা আওয়ামী লীগ এ সমাবেশের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দুই সেলফিতে বিএনপি নেতাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। যুক্তরাষ্ট্র তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় না দাবি করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিদেশিদের কাছে ঘুরঘুর করে লাভ নেই। যুক্তরাষ্ট্র তত্ত্বাবধায়ক বলে না। শেখ হাসিনার পদত্যাগের কথা বলে না। তাহলে কিসের ওপর ভিত্তি করে তোমরা ঘোরাঘুরি করছ? পিটার হাসের মুরব্বিরা ওই সেলফির সঙ্গে কথাও বলে নিয়েছে।’
আওয়ামী লীগের উন্নয়নের কারণে বিএনপি অন্তর্জ্বালায় ভুগছে বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে। সেখানে ইউরেনিয়ামের ৩ নম্বর চালান এসে গেছে। ফখরুল বলেন, পারমাণবিক এই বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিতে হবে। তাহলে শেখ হাসিনা যে এত টাকা দিয়ে ইউরেনিয়াম আনলেন, সেগুলো ফখরুল আর ওই মঈন খানের মাথায় ঢেলে দিই, তাহলে বুঝবেন কত ধানে কত চাল।’
বিএনপিকে ছাড় না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খেলা হবে, এখন কোয়ার্টার ফাইনাল, তারপর সেমিফাইনাল, জানুয়ারিতে ফাইনাল। বিএনপিকে আর ছাড় নেই। আন্দোলন করবা, আগুন নিয়ে আসবা, হাত পুড়ে ফেলব। লাঠি নিয়ে আসবা, হাত ভেঙে দেব। তোমাদের সাথে আর কম্প্রোমাইজ না।’ বিএনপির উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘তোমরা কম্প্রোমাইজের লোক না। তোমরা আমাদের শত্রু ভাবো, আমরা কেন বন্ধুত্ব রাখব? বিএনপি আওয়ামী লীগকে শত্রু ভাবে আর আমরা তাদের প্রতিপক্ষ ভাবতাম। সুতরাং শত্রুর সঙ্গে কোনো কম্প্রোমাইজ করব না।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই। সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও এস এম কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান, নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক), নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া।
বক্তব্যে জাতীয় পার্টির সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, ‘আপনারা বড় বড় কথা বলেন। আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন করে দেখেন কয়টি সিট পান?’ আওয়ামী লীগকে গণমানুষের দল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে জাতীয় পার্টির এক এমপি আছেন। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছেন। এটি জাতীয় পার্টির সিট নয়, এই এলাকাকে ও এলাকার মানুষকে রক্ষা করতে এখানকার মানুষ নৌকা চায় বলেও উল্লেখ করেন নানক।